সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভোট এলেই ফিল্মি দুনিয়ায় প্রোপাগান্ডা ছবির রমরমা নতুন নয়। বলিউড এক্ষেত্রে শীর্ষ স্থানাধিকারী। সম্প্রতি ‘দ্য বেঙ্গল ফাইলস’-এর ট্রেলারেও তেমনই জল্পনা উসকে দিয়েছেন গেরুয়াপন্থী পরিচালক বিবেক অগ্নিহোত্রী। গত এপ্রিল মাসে উত্তপ্ত মুর্শিদাবাদে শুটিং করতে এসে বাংলাকে কাশ্মীরের সঙ্গে তুলনা করে নেটপাড়ার একাংশের বিরাগভাজন হয়েছিলেন পরিচালক। উপরন্তু এবার ট্রেলারে যে রোমহর্ষক কোলাজ দেখিয়েছেন, তাতে প্রশ্ন উঠেছে, বিবেক কি কোনও অভিসন্ধি নিয়েই বাংলার ছাব্বিশের বিধানসভা ভোটের আগে নিজের সিনেমার নাম বদলে ‘দ্য বেঙ্গল ফাইলস’ রেখেছেন? এমন আবহেই বিতর্ক তৈরি হয় সৌরভ দাসকে নিয়ে। কারণ একুশের বিধানসভা ভোটের আগে যে সৌরভ দাস তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন, সেই অভিনেতাই কিনা বাংলাকে কালিমালিপ্ত করা সিনেমায় অভিনয় করছেন! বিতর্ক বাড়তেই এবার ‘মন্টু পাইলট’কে নিয়ে বড় তথ্য প্রকাশ করল তৃণমূল।
বিবেক অগ্নিহোত্রী পরিচালিত ‘দ্য বেঙ্গল ফাইলস’ ছবিতে ‘গোপাল পাঠা’ ওরফে গোপালচন্দ্র মুখোপাধ্যায়ের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন সৌরভ দাস। ট্রেলারে সেই ঝলক ইতিমধ্যেই মিলেছে। এরপরই প্রশ্ন ওঠে, বাংলা বিরোধী স্ট্র্যাটেজি মূলক সিনেমায় তিনি কেন? এপ্রসঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে সাফ জানিয়ে দেওয়া হল, “একবছর আগেই টলিউড অভিনেতা সৌরভ দাসকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে দল থেকে। সৌরভের বিরুদ্ধে আচরণগত কিছু অভিযোগ নেতৃত্বের কাছে জমা পড়েছিল। তার পরিপ্রেক্ষিতেই দল দূরত্ব তৈরির সিদ্ধান্ত নেয়। সৌরভ কখনোই সক্রিয়ভাবে সংগঠন করেননি। দু-একটি নির্বাচনে তাঁর আগ্রহেই প্রচারে এসেছিলেন। দল একাধিক শিল্পীকে প্রার্থী করলেও সৌরভকে করেনি। এখন জানা যাচ্ছে, এক বছর আগেই দল পুরোপুরি তাঁকে দূরে সরানোর সিদ্ধান্ত নেয়। ফলে এর মধ্যে কোনও যোগাযোগ ছিল না। এখন রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে কুৎসামূলক একটি সিনেমাতে সৌরভ যুক্ত বলে খবর।”
সাংবাদিকদের প্রশ্ন, সৌরভ যেহেতু আগে ভোটে তৃণমূলের প্রচার করেছে, তাই দল এখন কী ব্যবস্থা নিচ্ছে? তৃণমূলের তরফে জানানো হয়েছে, “এক বছর আগেই অন্য কিছু কারণে সৌরভকে দলের বৃত্ত থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে এখন নতুন করে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রশ্ন আসে না। সূত্রের খবর, দলের সংগঠন, নিয়মকানুনে সৌরভ মানেননি। আর তার বাইরে অন্য কিছু অভিযোগও দল পেয়েছিল। তাই অভিনেতাকে পুরোপুরি দলের গন্ডি থেকে সরিয়ে দিয়েছিল তৃণমূল। তারপরেই তিনি বাংলার বিরুদ্ধে কুৎসামূলক রাজনৈতিক অপপ্রচারের উদ্দেশ্যে তৈরি সিনেমার সঙ্গে জড়ান।”
একুশে শত চেষ্টা করেও বাংলায় পদ্ম ফোটাতে ব্যর্থ হয়েছে গেরুয়া শিবির! অতঃপর পাখির চোখ যে ছাব্বিশের বিধানসভা ভোটের দিকে, তা বলাই বাহুল্য। তার প্রাক্কালেই পঁচিশে নতুন সিনেমা ‘দ্য বেঙ্গল ফাইলস’-এর ট্রেলারে বাংলায় সাম্প্রদায়িক হিংসার দাবি তুলে ধরেছেন বিবেক। ট্রেলারের শুরুতেই নেপথ্য কণ্ঠে বলতে শোনা যায়, “আমি একজন কাশ্মীরি পণ্ডিত, তাই হলফ করে বলতে পারি যে বাংলা আরেকটা কাশ্মীর হতে চলেছে…।” এক দৃশ্যে জ্বলন্ত দুর্গামূর্তিকেও দেখানো হয়েছে। অতঃপর ট্রেলার মুক্তির পরই ‘দ্য বেঙ্গল ফাইলস’ ছবিটি ঘিরে অন্য ‘স্ট্র্যাটেজি’ দেখছে দর্শক, অনুরাগীরা। একাংশের প্রশ্ন, রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতেই কি শেষ মুহূর্তে সিনেমার নাম বদলে ফেললেন বিবেক অগ্নিহোত্রী? যদিও সেন্সর বোর্ডের তরফে এখনও পর্যন্ত কোনও আপত্তির কথা শোনা যায়নি, তবে ভবিষ্যতে কোনও ‘কাঁচি’ চলবে কিনা, সেই আশঙ্কাও অমূলক নয়!
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.