‘বহুরূপ’ মুক্তির আগে সংবাদ প্রতিদিন-এর মুখোমুখি সোহম চক্রবর্তী। শুনলেন শম্পালী মৌলিক
‘বহুরূপ’ ছবিতে আপনি অবতীর্ণ হচ্ছেন সাতটি ভিন্ন লুক-এ। কেন এই নানা অবতার?
– এখানে আমি একজন অভিনেতা, যার নাম ‘অভিমন্যু’। আপাতত এটুকুই বলব (হাসি)। বাকিটা ২৯ আগস্টের জন্য সারপ্রাইজ থাক। ছবিটা আদতে সাইকোলজিকাল থ্রিলার। পরিচালনায় আকাশ মালাকার।
এতগুলো লুকের প্রস্তুতি কেমন ছিল?
– খুবই কঠিন। প্রথমবার প্রস্থেটিক মেকআপ করলাম, তার একটা টেনশন ছিল। তবে কোথাও একটা ভরসার জায়গা ছিল যে, মেকআপ আর্টিস্ট সোমনাথ কুণ্ডু রয়েছেন। উনি যথেষ্ট সচেতন ছিলেন আমার কমফর্ট-এর জায়গাটা নিয়েও। প্রথমে আমার মুখের ছাঁচ নিয়ে নেওয়া হয়, তারপর লুক সেট হয়। শুটিংয়ের সময় আরও ইমপ্রোভাইজেশন করা হয়।
সাতটা লুক কেমন?
– বৃদ্ধের লুক রয়েছে, যেটা অনেকেই দেখেছেন ইতিমধ্যে। এছাড়া মাদারির রূপে, ছৌনাচ শিল্পীর লুকে, ট্রান্সজেন্ডারের রূপে এবং আমার নিজের স্বাভাবিক লুকেও দেখতে পাবেন দর্শক। এর বেশি বলছি না (হাসি)।
কমল হাসনকে আমরা ‘হিন্দুস্তানি’, কিংবা ‘চাচি ৪২০’-এর মতো ছবিতে বিভিন্ন লুকের চমক দিতে দেখেছি। সেই সব মনে পড়তে পারে?
– না, না, ‘চাচি ৪২০’-এর মতো মজার ছবি নয় এটা। এটা সিরিয়াস ছবি। লুক অনুসারে ‘হিন্দুস্তানি’-র কথা মনে এলেও, ওই ছবির সঙ্গে আমাদের ছবির কোনও যোগ নেই।
কীরকম সময় লেগেছে প্রত্যেকটা লুক-এর জন্য?
– প্রধান তিনটে লুকের জন্য প্রায় তিন ঘণ্টা করে লেগেছিল, এক-একটার জন্য। আর মেকআপ তুলতেই প্রায় দেড় ঘণ্টা। এক-একদিন এমনও হয়েছে, দু-তিনটে লুক ছিল। মানসিকভাবেও খুব চাপ ছিল। কারণ চরিত্রের বাহ্যিক পরিবর্তন ছাড়াও মানসিক প্রস্তুতির দরকার হয়। একটু সময় নিয়ে বিরতি নিয়ে করেছি। পুরো সময়টা স্ট্র দিয়ে জল খেতাম। লুকটা অনেকটা সাহায্য করেছে চরিত্রগুলো ধরতে। বড় চ্যালেঞ্জ ছিল আলাদা লুকগুলো ফুটিয়ে তোলা।
‘বহুরূপ’-কে উপলক্ষ করে বাংলা ছবি কি রেষারেষি ভুলে গেল? আপনাকে দেখা গিয়েছে ‘ধূমকেতু’-র স্পেশাল স্ক্রিনিংয়ে দেবের পাশে। ‘বেলা’-র প্রচারেও ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তর পাশে ছিলেন।
– এটা নিজেদের বোঝাপড়া। রেষারেষি মানে সুস্থ প্রতিযোগিতা তো থাকবে। সেটা দরকার। ব্যক্তিগত কোনও আক্রোশ যেন না থাকে। দেবের সঙ্গে আমার ভালো সম্পর্ক। খুবই বন্ধুর মতো। ও আমাকে যখন ‘ধূমকেতু’-তে আসতে বলে, আমি বলেছিলাম, ঠিক আছে ছদ্মবেশেই যাব। দেব, বলেছিল, তা হলে তো ভালো হয়। সেইভাবেই, তার আগে আমি শিবুদার (শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়) সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলাম। শিবুদাও চমকে গিয়েছিল। শিবুদার অফিস থেকে পুরোটা রাস্তা হেঁটে আমি প্রিয়াতে গিয়েছিলাম। সবাই ঠিক বুঝে উঠতে পারছিল না, এটা কে! প্রিয়াতে একটু বাধাও পেয়েছিলাম। তারপর ঢোকা গেছে। ইনফ্যাক্ট, সোমবার ঋতুদিও আসতে বলল ‘বেলা’র ইভেন্টে। গেলাম, ভালো লাগল। এটা ওই নিজেদের আন্ডারস্ট্যান্ডিং।
২৯ আগস্ট একই দিনে ‘বহুরূপ’, ‘বেলা’, ‘সরলাক্ষ হোমস’ ও ‘হাউ আর ইউ ফিরোজ’ আসছে। লড়াই তো আছেই?
– হান্ড্রেড পার্সেন্ট, একটা সুস্থ প্রতিযোগিতা থাকা উচিত। ভালো কাজের খিদে নয়তো থাকবে না। পরস্পরকে স্পেসও দিতে হবে, ব্যবসা বোঝা সত্ত্বেও।
আর ইধিকা পালের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা কেমন?
– খুব ভালো। ইধিকা খুব ভালো অভিনয় করেছে এই ছবিতে। ওর চরিত্রটাও সমান গুরুত্বপূর্ণ। হয়তো প্রথমবার দর্শক আমাকে ইধিকার সঙ্গে দেখবেন, কিন্তু আমার প্রযোজনা সংস্থাই ইধিকাকে প্রথম নির্বাচন করেছিল লিড নায়িকা হিসাবে। কিন্তু সেই ছবিটা টেকনিক্যাল কিছু কারণে আটকে আছে। তারপরে ‘খাদান’-এর সময় দেব আমাকেই বলে একটা চরিত্রের জন্য ইধিকাকে দরকার। তখন ওই কাজটা হয়।
সোহম ভালো অভিনেতা, অনেকেই বলেন। এই ছবি কি পুরনো সোহমকে ফিরিয়ে দেবে?
– সেটা জানি না। অভিনেতা হিসাবে তো একটা ইচ্ছা, লক্ষ্যমাত্রা থাকে যেন চরিত্রটা ঠিকভাবে তুলে আনতে পারি, চিত্রনাট্য যেন স্ট্রং হয়, নিজেকে যেন এক্সপ্লোর করতে পারি। প্রত্যেক ছবিতেই ভালো করতে চেষ্টা করি। ‘বহুরূপ’-এ আগের থেকেও বেশি চ্যালেঞ্জিং চরিত্র পেয়েছি। চেষ্টা করেছি (হাসি)।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.