Advertisement
Advertisement
Koel Mallick

‘মেনস্ট্রিম বাংলা ছবির কোটা আমার শেষ’, ২২ বছর পেরিয়ে কেন একথা কোয়েলের মুখে?

পরমব্রতর সঙ্গে কাজ নিয়ে কী বললেন টলিক্যুইন কোয়েল?

Koel Mallick talked about her long filmy career

ছবি: ইনস্টাগ্রাম

Published by: Arani Bhattacharya
  • Posted:May 30, 2025 6:35 pm
  • Updated:May 30, 2025 6:35 pm   

দুই দশকের শুটিংয়ের বিচিত্র অভিজ্ঞতা নিয়ে কী বললেন কোয়েল মল্লিক! শুনলেন বিদিশা চট্টোপাধ্যায়।

Advertisement

৩০ মে (আজ) মুক্তি পাচ্ছে ‘সোনার কেল্লায় যকের ধন’। এদিকে ‘ফেলুদা’ অনুপ্রাণিত ‘বেনারসে একেন’, অন‌্যদিকে ওটিটিতে ‘জয়সলমীর জমজমাট’। নস্টালজিয়া ছাড়া বাঙালি দর্শককে ঘরে ফেরানো কঠিন?

কোয়েল: সেটা আমি বলব না। নস্টালজিয়া ছাড়াও এমন অনেক ছবি আছে যেগুলো বক্স অফিসে সফলও হয়। আর এই ছবিটার ক্ষেত্রে আমি বলতে চাই, যখন এই ফ্র‌্যাঞ্চাইজির তৃতীয় ছবি নিয়ে ভাবনাচিন্তা হচ্ছিল তখন নানা বিষয় উঠে এসেছিল। তারপর যখন শুনলাম সোনার কেল্লায় শুটিং হবে খুবই উত্তেজিত হয়েছিলাম। তারপর ‘মুকুল’ ছবিতে থাকবে, সে এখন পূর্ণবয়স্ক এবং তার পূর্বজন্মের স্মৃতি ফিরে আসছে– সব মিলিয়ে দারুণ গল্প। যদি জোর করে এই প্লট তৈরি করা হত তাহলে হয়তো করাই হত না। এটুকু বলব, গল্পটা খুব অর্গ‌্যানিক‌্যালি তৈরি হয়েছে।

সোনার কেল্লায় শুটিং করার সময় স্মরণীয় কোনও ঘটনা বা স্মৃতি?

কোয়েল: পরিবারের সঙ্গে আগে জয়সলমীর গিয়েছি। কাজের জন‌্য যে মুকুলের বাড়ি পর্যন্ত পৌঁছে যাব তা ভাবিনি। ছোটবেলায় ‘ছুটি ছুটি’ অনুষ্ঠানে সত‌্যজিৎ রায়ের ‘সোনার কেল্লা’ দেখা খুব প্রিয় স্মৃতি। আর সেইখানে আমি শুট করছি, ভাবা যায়! তাই যখন আমরা মুকুলের বাড়িতে গিয়ে শুটিং করছি সেটা খুব মেমোরেবল। এবং এই বাড়িতে খুব গুরুত্বপূর্ণ সিকোয়েন্সের শুটিং হয়েছে। ‘মুকুল’-এর সঙ্গে ছবিতে ‘বিমল’, ‘কুমার’-এর পাশাপাশি ‘হেমাঙ্গ হাজরা’ না থাকলেও ‘রুবি চ‌্যাটার্জি’ রয়েছে।

পরমব্রত চট্টোপাধ‌্যায়ের সঙ্গে ‘হেমলক সোসাইটি’ দিয়ে শুরু। পাঁচটা ছবি করে ফেলেছেন? আপনাদের বন্ধুত্ব, কেমিস্ট্রি কেমন?

কোয়েল: হ্যাঁ, সেই অর্থে হেমলক-ই প্রথম। বহু বছর আগে প্রভাত রায়ের ‘শুভদৃষ্টি’ ছবিতে খুব স্বল্প স্ক্রিন শেয়ার করেছিলাম। হেমলকের কথাই বলি। খুব পেশাদার, তখনই বুঝেছিলাম। তারপর বেশ কিছু ছবি করার পর একরকম বন্ধুত্ব, কেমিস্ট্রি তৈরি হয়েই যায়। আর এবারে রাজস্থানে অনেকদিন ধরে শুট করেছি। এবং পরমের সঙ্গে অনেক ধরনের আড্ডা মারা যায়।

হেমলকের ‘মেঘনা’, নাকি কিলবিলের ‘পূর্ণা’– কে এগিয়ে?

কোয়েল: আমি তো বলব, ‘পূর্ণা’ই অনেকটা এগিয়ে ‘মেঘনা’-র চেয়ে। যতটুকু দেখেছি আমার তাই মনে হয়েছে। যারা নতুন কাজ করছে তারা সকলেই খুব ডিজার্ভিং, সকলেই ভালো কাজ করছে।

২০০৩ সালে ‘নাটের গুরু’ দিয়ে শুরু। বাইশ বছর হল, পঁচিশে পড়লেন বলে! তেমন কোনও বড় প্ল‌্যান আছে সিলভার জুবিলির? রঞ্জিত মল্লিকের সঙ্গে আপনাকে দেখা যাবে? জানি

কোয়েল: উফফ! তুমি আমাকে মনে করিয়ে দিলে, ভগবান! আমার তো মনে হয় এই সবে কাজ শুরু করলাম, কীভাবে এত বছর পেরিয়ে গেল বুঝতে পারলাম না। পঁচিশ বছর নিয়ে ভাবিনি, আগে নিজেকে চিমটি কেটে দেখি! তবে হ্যাঁ, বাবার সঙ্গে কাজ করছি। আমার প্রথম ছবি ‘নাটের গুরু’-তে বাবা, আমার ‘বাবা’ই হয়েছিলেন। এতবছর পর আবার করব। তবে ‘স্বার্থপর’-এ বাবা একেবারে অন‌্যরকম একটা চরিত্রে অভিনয় করছেন। এবারে আর আমার বাবা নন। ছবিতে বাবার চরিত্রের একটা সংঘাত আছে অন‌্য একজনের সঙ্গে। সংঘাতের কারণ আমি। আর বলব না (হাসি)।

২০০৩-এ যে সময় আপনি কেরিয়ার শুরু করেছিলেন, মেনস্ট্রিম বাংলা ছবির রমরমা ছিল। এবং আপনাকে বোধহয় শেষ সুপারস্টার নায়িকা হিসাবে চিহ্নিত করা যায়। দেব-জিতের সঙ্গে লম্বা হিট কেরিয়ার। সেই সময়টা ফেলে এসেছেন। কতটা মিস করেন?

কোয়েল: ওই ছবিগুলোর জন‌্যই আজকের আমি এখানে। দ‌্যাট মেড মি। এখন অনেক বছর পেরিয়ে গিয়েছে, আমিও অনেকটা পরিণত হয়েছি। এই ধরনের ছবির কোটা আমার শেষ বলা যায়। দেখতে চাই, নতুনরা কেমন করছে। যদিও আগের থেকে তেমন বাণিজ্যিক ছবির সংখ‌্যা কমেছে, তবুও আমি মনে করি সব ধরনের ছবির ব‌্যালান্স দরকার।

মেট্রোতে কিন্তু এখনও আপনার পুরনো ছবির গান চলে, বরফে শিফন শাড়িতে নাচের দৃশ্যে কোয়েল।

কোয়েল: এটা অন‌্য এক্সপিরিয়েন্স। এই ছবিতে যেমন রাজস্থানের ঠান্ডায় সোয়েটার পরতে পেরেছি–সেটাই যেন একটা বিলাসিতা। আর দশ বছর আগে, ঠান্ডায় সুইজারল‌্যান্ডে হাড়- কাঁপানো শীতে ছোটো জামা, স্কার্ট পরে হাসছি, গাইছি, নাচ করছি। আর যেই শট কাট হচ্ছে কম্বলের তলায় ঢুকে যাচ্ছি। গরম জল, কফি খাচ্ছি। এটাও অভিজ্ঞতা। এতবার সুইজারল‌্যান্ডে গান শুট করেছি, আমরা প্রায়ই বলতাম এবার অন্তত ঠান্ডায় শুট করিও না। দেব হয়তো জিনসের তলায় তিনটে প‌্যান্ট পরে কাঁপছে আর এদিকে আমি স্কার্ট পরে হাসছি। সবসময় বলতাম, ‘খবরদার আমার সামনে কাঁপবে না… (হাসি)। মাঙ্কি ক‌্যাপ পরে, ‘বহুত ঠান্ডা হ‌্যায় বলবে না।’ এটা অন‌্যরকম থ্রিল। এখন দেখলে স্মৃতি ফিরে আসে, মনে হয় এটা কোন যুগের কোয়েল। 

যেহেতু মূলত মেনস্ট্রিম ছবিতেই বেশি কাজ করেছেন, আক্ষেপ হয়? বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত বা ঋতুপর্ণ ঘোষের সঙ্গে কাজ হল না।

কোয়েল: ‘খেলা’-র আগে একবার ঋতুপর্ণ ঘোষ বলেছিলেন, তখন সময় বের করতে পারিনি, তারপর ‘ব্যোমকেশ’ মানে ওঁর শেষ ছবির আগে একবার বলেছিলেন, তখন আমার গল্পটা ঠিক পছন্দ হয়নি। আর সেই ছবিটা হল না। 

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ