সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কাঞ্চন-শ্রীময়ী বরবার ঈশ্বরে বিশ্বাসী। প্রতি পূর্ণিমা, অমাবস্যা-সহ তাঁদের বাড়িতে নিত্যপূজিতা মাকালী। বছর খানেক আগে শ্রীময়ী চট্টরাজের উদ্যোগেই কাঞ্চন মল্লিকের বাড়িতে কালীপুজো শুরু হয়। এবার তাঁদের পুজো পাঁচ বছরে পড়ল। কেমন প্রস্তুতি? খোঁজ নিল সংবাদ প্রতিদিন।
মাকালীর জন্য কেনাকাটির মাঝেই সংবাদ প্রতিদিন -এর সঙ্গে কথা বললেন শ্রীময়ী চট্টরাজ। অভিনেত্রীর মন্তব্য, “আমার বেশ ভালো লাগে, কারণ দুর্গাপুজো মন চাইলেও করতে পারি না। বিরাট নিয়ম। অনেক লোকবল দরকার। তবে কালীপুজো একদিনের হলেও প্রস্তুতি কিন্তু কম খাটুনির নয়।” আগের রাত থেকে বাড়ি সাজানো পর্ব চলে কাঞ্চন-শ্রীময়ীর। এবারও কাকভোরে গিয়ে হাওড়ার হাট থেকে ফুল কিনবেন। তার পর ঠাকুরের থান পরিষ্কার করে মাকে সাজানোর পালা। শ্রীময়ী জানালেন, গত চার বছর ধরে কালীঘাটের এক দোকান থেকে তাঁদের মাকালীর জন্য বেনারসি শাড়ি আসে। বাকি দশকর্মা, আসর সাজানোর জিনিস সব কেনা হয়ে গিয়েছে। ফি বছর আগে থেকে অর্ডার দিয়ে গয়না বানানো হয়। এবার মায়ের জন্য মিনে কাজ করা সোনার হার কিনেছেন। কাঞ্চনপত্নীর সংযোজন, “আরেকটা বড় হার কেনা হয়েছে। এছাড়াও মুকুট, হাতবালা, চূড়জোড়া-নুপূরে আমাদের মা রাজরানি সাজেন। ভোগে থাকে খিচুড়ি, লাবড়া, পাঁচ রকমের ভাজা, ফুলকপির রসা, পনির কিংবা বাঁধাকপি। আর শেষপাতে চাটনি, মিষ্টি, পায়েস।” কালীপুজো ঘিরে বরাবর উচ্ছ্বাস, উত্তেজনা দ্বিগুণ থাকে শ্রীময়ী চট্টরাজের। এবার আরও বেশি। কারণ কৃষভির প্রথম দীপাবলি। অভিনেত্রী বললেন, “গতবার কৃষভি যেহেতু আমার গর্ভে ছিল, ভোগ রাঁধতে পারিনি। কাঞ্চনকে দেখিয়ে দিচ্ছিলাম, ও রেঁধেছে। তবে এবার কর্তা-গিন্নি মিলে ভোগ রাঁধব।”
শ্রীময়ী জানালেন, “২০২১ সালে আমিই কাঞ্চনের বাড়িতে আমিই কালীপুজো শুরু করেছিলাম। ওর অভিমান হয়েছিল মাকালীর উপর। তাই দীপাবলিতে বাড়ি অন্ধকার রেখে অন্য কারও বাড়িতে চলে যেত কাঞ্চন। কারণ কালীপুজোর দিনই দু’ বছর দুর্ঘটনার মুখোমুখি হতে হয় ওকে। একবার কাঞ্চনের মায়ের সঙ্গে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে। এক কালীপুজোর রাতে কাঞ্চনের মায়ের গায়ে আগুন লেগে অনেকটা পুড়ে গিয়েছিল। আরেকবার এই দীপাবলীতেই ওঁর মায়ের হাঁটুর মালাইচাকি ভেঙে যায়। তার পর থেকে প্রতিবার অভিমান করে নিজের বাড়ি অন্ধকার রাখত কাঞ্চন। একটা প্রদীপও জ্বালাত না।” তাহলে পুজোটা শুরু হল কীভাবে? কথাপ্রসঙ্গে অভিনেত্রী জানালেন, “শুনেছি, কাঞ্চনের মা সাধক রামপ্রসাদের বংশধর। তবে সেবাড়ির পুজো সম্পর্কে আমি খুব একটা অবগত নই।”
শ্রীময়ী জানালেন, “কুড়ি বছর পর একুশ সালে যখন আমি প্রথম কাঞ্চনের বাড়িতে যাই, ওকে বলেছিলাম- মাকালী পুজো চাইছেন। তুমি আবার পুজো শুরু করো। সেভাবেই শুরু হল কাঞ্চনের পৈতৃক বাড়িতে কালীপুজো। তখন থেকেই ওঁর বাড়ির কালীপুজোর সঙ্গে আমি যুক্ত।” অনেক নিয়ম। দিনভর নির্জলা উপোস রেখে সুগৃহিণীর মতো নিজেহাতে পুজোর আয়োজন করেন শ্রীময়ী। ভোগ রাঁধেন। ২০২৪ সালে অন্তঃসত্ত্বা অবস্থাতেও সেই রীতিতে ছেদ পড়েনি। তবে গর্ভবতী থাকায় গতবার নির্জলা উপোস রাখেননি শ্রীময়ী। শুধু ডাবের জল খেয়ে ছিলেন। তাতেও অবশ্য গুরুজনদের বকুনি শুনতে হয়েছিল শ্রীময়ীকে। তবে এবার মেয়ে কৃষভি, স্বামী কাঞ্চনকে নিয়ে জমজমাট কালীপুজোর প্ল্যান কষে ফেলেছেন শ্রীময়ী চট্টরাজ মল্লিক।
কথাপ্রসঙ্গে অভিনেত্রী জানালেন, কৃষভির জন্য শারারা স্টাইলের জামা কেনা হয়েছে। মেয়ে সাজতে ভালোবাসে। তাই চিন্তা নেই মা শ্রীময়ীর। কর্তা-গিন্নিও নতুন পোশাকেই সাজবেন। কালীপুজোর আগের দিন চতুর্দশীতে রীতি অনুযায়ী চোদ্দো শাক খেয়ে চোদ্দো বাতি জ্বালবেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.