Advertisement
Advertisement
Jeet Ganguly-Zubeen Garg

অক্টোবরেই পাহাড়ের উপরে জুবিনের নতুন স্টুডিও দেখতে যাওয়ার কথা ছিল: জিৎ

'জুবিন সম্পর্কে অতীতকালে লিখতে পারছি না', বন্ধুবিয়োগে কলম ধরলেন জিৎ।

Jeet Ganguly penned his emotion for singer friend Zubeen Garg who died today
Published by: Arani Bhattacharya
  • Posted:September 19, 2025 5:38 pm
  • Updated:September 19, 2025 5:45 pm   

জিৎ গঙ্গোপাধ্যায়: ৩০ বছরের বন্ধুত্ব। জুবিন সম্পর্কে ‘অতীতকালে’ লিখতে হবে ভাবতে পারছি না। সুরের জগতের ক্ষতি তো বটেই আমি আমার একজন ভালো বন্ধু হারালাম। শুধু কি তাই? শুক্রবার বিকেলে যখন জুবিনের মৃত্যুসংবাদ আমি পেলাম তখন স্টুডিওতে আমি ওরই গান মিক্সিং করছি। সোহম চক্রবর্তীর নতুন একটি ছবি ‘সে তো আজও বোঝে না’-এর জন্য নতুন একটা গান জুবিনকে দিয়ে গাইয়েছিলাম। স্টুডিওতে আজ যখন সেটা নিয়ে আমি ব্যস্ত তখনই ওর মৃত্যুসংবাদ এসে পৌঁছাল। আচম্বিতে এমন খবরে আমি রীতিমতো স্তম্ভিত হয়ে যাই। এ খবর সহজে মেনে নিতে পারিনি। মাত্র চার দিন আগেই আমাদের কথা হয়েছিল।

Advertisement

আমার আর জুবিনের জুটি ইন্ডাস্ট্রিতে ইতিহাস তৈরি করেছিল। ‘পিয়া রে’, ‘মন মানে না’, ‘বোঝে না সে বোঝে না’, ‘আয়না মন ভাঙা আয়না’র মতো গান এক একটা ইতিহাস তৈরি করেছে একসময়। আমি আমার প্রণের বন্ধুকে হারালাম। এইরকম মানুষ এইরকম শিল্পী আর কখনও আমরা পাব না। আমার সঙ্গে ফোনে প্রায়ই কথা হত। তবে ও যেহেতু অসমে থাকত তাই খুব একটা দেখা হত না। ওর আসা যাওয়াও কমে এসেছিল এখন। একবার আমাকে অসমে ডেকেছিল নতুন গান রেকর্ডিংয়ের জন্যও। সেখান থেকে ফিরে এসে আমি ওকে একটা গান পাঠালাম। জিজ্ঞেস করলাম, “একটা গান রয়েছে জুবিন, তুই গাইবি?” জুবিন সঙ্গে সঙ্গে বলল, “হ্যাঁ, নিশ্চয়ই গাইব।” আমাকে গানটা পাঠাতে বলল। আমি গানটা পাঠাতেই আনন্দের সঙ্গে বলে উঠল “কি দারুণ গান তৈরি করেছিস জিৎ। আমি গেয়ে তোকে পাঠাচ্ছি।” আমরা ভিডিও কলে গান রেকর্ড করলাম।

শুধু তাই নয় আরও একটা কথা বলার, তা হল এদেশে অনেক শিল্পী আসবে কিন্তু জুবিন গর্গ আর দ্বিতীয়টা হবে না। ও শুধু গায়ক ছিল না আমাদের আবেগ ছিল। ওইরকম অনেক গায়কের সঙ্গে আমি কাজ করেছি কিন্তু ও যখন মঞ্চে যায় তখন একটা ম্যাজিক তৈরি করত। মঞ্চে যায়ই বলব কারণ ওকে আমি অতীত হিসেবে ভাবতে পারব না। ও নেই এটা মেনে নেওয়ার সাধ্য আমার নেই। নিজের খেয়াল রাখত না। খাওয়াদাওয়া ঠিক মতো করত না। আমি আর আমার স্ত্রী চন্দ্রাণী ওকে সবসময় সাবধান করতাম। শুধু কি তাই? আমার এবং আমার স্ত্রী চন্দ্রাণীর আগামী অক্টোবরে ওর কাছে যাওয়ার কথা ছিল। পাহাড়ের উপর ওর রেকর্ডিং স্টুডিও দেখতে। নতুন বানিয়েছে। সেটাই দেখতে যাওয়ার কথা ছিল আমাদের। বারবার ও বলেছিল, “তোরা এখানে এসে কোনও হোটেলে থাকবি না। আমার কাছে থাকবি। আমরা একসঙ্গে অনেক গান তৈরি করব।” আমি আমার ৩০ বছরের বন্ধুকে হারালাম। শিল্পীকে হারানোর পাশাপাশি বন্ধুবিয়োগের শোকে আমি মুহ্যমান।

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ