ছবি: ইনস্টাগ্রাম
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অভিনয়, শুটিং ফ্লোর এসবের বাইরে তিনি আদ্যান্ত একজন পরিবারকেন্দ্রিক মানুষ। পরিবারকে ঘিরেই থাকতে তিনি ভালোবাসেন। তিনি অভিনেত্রী রূপাঞ্জনা মিত্র। এই বছর পুজোর প্ল্যান কী অভিনেত্রীর? তা জানতেই যোগাযোগ করেছিল সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল। হাসিমুখে পুজোর প্ল্যান ভাগ করে নিলেন রূপাঞ্জনা।
এই বছর পুজোর (Celebrity Durga Puja) কী প্ল্যান জানতে চাইলে রূপাঞ্জনা বলেন, ” এখনও অবধি কোনও প্ল্যান হয়নি। ছেলে রিয়ানের হাফ ইয়ার্লি পরীক্ষা চলছে। তাই এখনও অবধি কিছু প্ল্যান করিনি। তবে কিছু ছোট ছোট প্ল্যান তো রয়েছেই। সেসব হবে আমার পরিবার ও কাছের মানুষদের সঙ্গে।” পুজোর কেনাকাটা কতদূর এগিয়েছে রূপাঞ্জনাকে প্রশ্ন করতেই তিনি বলেন, “আমি প্রতিবছরই লাস্ট মোমেন্ট শপিং করি। তবে কার জন্য কী কিনতে হবে সেতা লিখে রাখি। সকলের পছন্দের কথা মাথায় রেখে কেনাকাটা সারি পুজোর। রিয়ানের জন্য অবশ্যই পুজোর জামা কিনব। সঙ্গে কাছের প্রত্যেকের জন্যও কিনব। আসলে একটা সময়ে, যখন ছোট ছিলাম তখন পুজোয় চারদিনের চারটে জামা হলে একটা আলাদা আনন্দ ছড়িয়ে পড়ত মনে। শুধু কি তাই? বন্ধুদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে জামা পরার একটা বিষয় তো থাকতই। কিন্তু এখন সময়ের সঙ্গে সঙ্গে, বয়স বাড়ার পর এখন নিজের জন্য কেনাকাটা করার থেকে বেশি সকলকে পুজোর উপহার দিয়ে আনন্দ পাই। সকলের আনন্দেই আনন্দ খুঁজে পাই এখন।”
ছোটবেলায় পুজোর নস্ট্যালজিয়া কী রূপাঞ্জনার কাছে? এই প্রশ্ন করতেই অভিনেত্রী স্মৃতির পাতায় ডুব দিয়ে বলেন, “হাফ ইয়ার্লি পরীক্ষার পর পুজো আসত। এটা আলাদা একটা উত্তেজনা ছিল। ঠিক যেমন এখন সেটা রিয়ানের হয়। তার সঙ্গে ছোটবেলার পুজো বলতেই যেটা মনে পড়ে তা হল বাবার হাত ধরে উত্তর কলকাতার ঠাকুর দেখা। উত্তরের যত নামী পুজো মণ্ডপ রয়েছে বাবা সবকটি পুজো মণ্ডপ ঘুরে দেখাতেন। এছাড়াও আমি ছোটবেলাটা যেখানে কাটিয়েছি দক্ষিণ কলকাতায়, সেখানে বহু জনপ্রিয় পুজো (Celebrity Durga Puja) হয়। সেগুলি ঘুরে দেখার বিষয় তো থাকতই। এছাড়াও সেই সময় পাড়ার পুজোয় সকলে একজোট হতাম, যে আবাসনে থাকতাম সেখানেও পুজো হত। সবাই সেখানে একসঙ্গে হলে একটা একান্নবর্তী পরিবার হয়ে উঠতাম। এটাই ছিল আমার ছোটবেলার পুজো। সঙ্গে থাকত ঝাড়গ্রামে আমার মামার বাড়ির পুজো। সেটা নিয়েও একইভাবে উচ্ছ্বাস থাকত এখনও তা অমলিন। সময়ের সঙ্গে এখন পুজোর সবটাই পরিবার, বন্ধুবান্ধব্দের নিয়ে কাটে। এই বছর পুজোয় আমার এবং রাতুলের অনেক বন্ধুবান্ধব কলকাতায় আসছে। এই একটা সময়ই সকলের সঙ্গে দেখা হয়। তাই এটা একেবারেই মিস করা যায় না। একইসঙ্গে বাড়ির সকলকে নিয়ে বেরনোর প্ল্যানও করি।”
অভিনেত্রী আরও বলেন, “বাঙালিদের পুজোটা অনেককিছুর মতোই সংস্কৃতিকেন্দ্রিকও। তার অন্যথা এখনও হয়নি। ছোটবেলার পুজোর আনন্দের সঙ্গে মিশে থাকত নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। নাচ, গান, নাটক ছিল অঙ্গাঙ্গীভাবে আমার পুজোর সঙ্গে জড়িয়ে। যে আবাসনে থাকতাম সেখানকার সকলেও অংশ নিত। মহালয়া থেকে দশমী পড়াশোনার কোনও ব্যাপার থাকত না, শাসন-বারণ থাকত না এটাই ছিল তখন পুজোর আরও একটা আনন্দ। আবাসনের সকলে এক হয়ে পুজোটা উপভোগ করতাম। আগামিদিনে মাকে নিজের ঘরে এনে পুজো করার খুবই ইচ্ছা রয়েছে। যদি মা নিজে তা চান, আমার ঘরে আসার ইচ্ছা তাঁর হয় তাহলে ছোট করে পুজো করব আগামীতে নিজের ঘরেই।”
পুজোয় পেটপুজোয় কী কী মাস্ট রূপাঞ্জনার? অভিনেত্রী বলেন, “খাওয়াদাওয়া বলতে ভাত, ডাল, আলু সেদ্ধ, পোস্ত বাটা এই কমফোর্ট ফুডের মধ্যে থাকতেই আমি ভালোবাসি। পুজো এলে তাতে কোনও পরিবর্তন হয় না। তবে পুজোর সময় লুচি মাস্ট । এছাড়াও পুজোর কদিন আমার বাড়ির আশেপাশের বিভিন্ন ক্লাব থেকে ভোগ আসে। সঙ্গে অনেক জায়গায় নিমন্ত্রণ থাকে। সব জায়গাতেই খাওয়াদাওয়া হয়। আমি মনে করি মায়ের উৎসবে মা নিজে যে খাবার খাওয়ার সুযোগ করে দেবেন তাই আমি গ্রহণ করব। ভোগ আমি কোনওভাবেই মিস করি না। তাছাড়া আমি হালকা ও নিরামিষ খাবার খেতেই পছন্দ করি। ছোটবেলায় যে কোনও উৎসবে আমিষ খাওয়ার যে ইচ্ছা থাকত তা আর এখন নেই। তবে নিজে না খেলেও রিয়ান একটু চিকেন খেতে ভালোবাসে। তাই ওর কথা মাথায় রেখে খাবারে মাঝে মাঝে নানা বদল আনতেই হয়। সবাইকে নিয়ে উৎসবে ভালো থাকাতেই বিশ্বাসী আমি। আমার কাছে জীবনের মূল্যবোধ ভীষণ দামি।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.