ফাইল ছবি
কোনও অবস্থাতেই রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধ করা উচিত নয় ভারতের। সার্বভৌমত্ব রক্ষার ইস্যুতে ভারতের হয়ে রাশিয়ার পাশাপাশি এবার চিনও!
স্টেট ব্যাঙ্ক একটি হিসাব প্রকাশ করে বলেছে যদি ভারত এই মুহূর্তে রাশিয়ার থেকে তেল কেনা বন্ধ করে, তাহলে বর্তমান আর্থিক বছরেই ভারতের তেল আমদানি বাবদ খরচ এক ধাক্কায় ৯০০ কোটি ডলার বেড়ে যাবে। আমাদের অর্থনীতির নিরিখে এটি বিরাট অঙ্ক। আমাদের জ্বালানির চাহিদার প্রায় ৮৫ শতাংশই আমদানিকৃত তেল থেকেই মেটাতে হয়। অামদানির বড় অংশ হয় রাশিয়া থেকে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ভারত রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনা বাড়িয়েছে। কারণ ইউরোপীয় দেশগুলি রাশিয়ার থেকে জ্বালানি কেনা বন্ধ করায় তাদের তেলের দাম কমেছে।
রাশিয়া প্রতি বছর বিশ্বের জ্বালানি চাহিদার ১০ শতাংশ মেটায়। এ-বছর ভারত মোট জ্বালানি চাহিদার ৩৫ শতাংশের বেশি মেটাচ্ছে রাশিয়া থেকে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়ার থেকে তেল কেনা বন্ধ করার জন্য ভারতের উপর প্রবল চাপ তৈরি করেছেন। বাণিজ্য চুক্তি না করার জন্য ভারতীয় পণে্যর উপর তিনি অাগেই ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছিলেন। রাশিয়ার থেকে তেল কেনার জন্য অারও ২৫ শতাংশ জরিমানা ধার্য করেছেন। ট্রাম্পের কাছে রাশিয়া অাসলে বাহানা। তিনি কৃষিপণ্যর বাজার খোলার জন্য ভারতের উপর চাপ তৈরি করতে চাইছেন। অাসলে নরেন্দ্র মোদির সরকার অামেরিকার সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে অালোচনা শুরুর সময় থেকে কৃষি ও দুগ্ধজাত পণ্যর বাজার খুলে দেওয়ার বিষয়ে যথেষ্ট নরম মনোভাব নিয়ে চলছিল। নীতি অায়োগের পক্ষ থেকে এই দু’টি ক্ষেত্র বিদেশি সংস্থার জন্য কিছুটা উন্মুক্ত করার পক্ষে সওয়াল করে বাজারে নিবন্ধও ছাড়া হয়। বাজারের প্রতিক্রিয়া দেখার জন্যই। প্রতিক্রিয়া বিরূপ হতে পারে উপলব্ধি করেই মোদি সরকার পিছু হটে। নীতি আয়োগের ওয়েবসাইট থেকে এই সংক্রান্ত নিবন্ধগুলি মুছে দেওয়া যার সাক্ষ্য বহন করে। এরপরই আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনায় কৃষি ও দুগ্ধজাত ক্ষেত্র নিয়ে ভারতের অবস্থান কঠোর হয়। ট্রাম্পের ক্ষোভ এখানেই। ট্রাম্পের এই চাপের মুখে ভারতকেও দৃঢ় থাকতে হবে।
মোদি জানিয়েছেন, চাপের মুখে ভারত মাথা নোয়াবে না। আমেরিকার উপর পালটা চাপ সৃষ্টিতে ভারত রাশিয়ার সঙ্গে সখ্য বাড়াচ্ছে। এই বছরের শেষার্ধে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ভারত সফরে আসার কথা। ‘জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা’ অজিত দোভালের রাশিয়া গিয়ে পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ-ও ব্যাপকভাবে প্রচারিত। একইসঙ্গে মোদির চিন-সফরের কথাও ঘোষণা করা হয়েছে। তাৎপর্যপূর্ণভাবে এই ইসু্যতে রাশিয়ার সঙ্গে চিনও ভারতের পাশে। রাশিয়া বলছে, জাতীয় স্বার্থে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা যে কোনও সার্বভৌম রাষ্ট্রের রয়েছে। একই সুর চিনের গলাতেও। এখন ভারতের উচিত রাষ্ট্রের সার্বভৌম ক্ষমতার মর্যাদা রক্ষা করা। কোনও অবস্থাতেই রাশিয়ার থেকে তেল কেনা বন্ধ না-করা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.