Advertisement
Advertisement
Darjeeling

অস্থির নেপাল, বৃষ্টি-বিপর্যস্ত সিকিম! পুজোয় পর্যটকদের ভিড় দার্জিলিং-কালিম্পং-ডুয়ার্সমুখী

অনেকেই ‘অফবিট ডেস্টিনেশনে'র হোমস্টেতে গুলিতে বুকিং করছেন।

Unsettled Nepal, rain-ravaged Sikkim Tourists flock to Darjeeling-Kalimpong-Dooars for Puja

ফাইল ছবি

Published by: Subhankar Patra
  • Posted:September 18, 2025 9:21 pm
  • Updated:September 18, 2025 9:21 pm  

বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি: বাংলার প্রাচীন প্রবাদ ‘কারও পৌষ মাস, তো কারও সর্বনাশ! ‘জেন জি’ আন্দোলনের জেরে নেপালে ওলি সরকারের পতন ঘটেছে। লাগাতার বৃষ্টির জেরে ধসে বিপর্যস্ত সিকিম। যোগাযোগ ব্যবস্থা স্বাভাবিক হয়নি। পুজোর লম্বা ছুটিতে এই দুই জায়গা ঘুরতে যাওয়ার ইচ্ছা থাকলেও পরিস্থিতির জেরে বুকিং বাতিল করেছেন তারা। ঝুঁকি নিচ্ছেন না অনেকেই। এমন পরিস্থিতিতে কপাল খুলেছে দার্জিলিং-কালিম্পং ও ডুয়ার্সের ‘কপাল’। পুজোর ছুটিতে পর্যটকদের বড় অংশ পাড়ি জমাতে চলেছেন সেখানে।

Advertisement

পুজোর ছুটিতে বাঙালি পর্যটকের সিংহভাগই ছুটে যান পাহাড়ে। তবে সেই ভিড় অনেকাংশে ভিনরাজ্য বা অন্য দেশের দিকেই থাকে। ডুয়ার্সে খুব বেশি পর্যটক ভিড় করেন না। দুই তিন বছর থেকে দার্জিলিং ছেড়ে অনেকেই বেছে নিয়েছিলেন নেপাল এবং উত্তর সিকিমের বিভিন্ন অফবিট জায়গা। কিন্তু এবার দুই ডেস্টিনেশনেই শঙ্কার ছায়া। নেপালে অশান্তি। অন্যদিকে উত্তর সিকিমে ভূমিধসের কারণে যাতায়াতের ঝুঁকি। উত্তর সিকিমের পর্যটন ব্যবসায়ীরা বুকিং নেওয়া বন্ধ রেখেছেন। পরিবর্তে দক্ষিণ-পশ্চিম সিকিম ভ্রমণের আর্জি রাখা হচ্ছে।

এমন অবস্থায় দার্জিলিং, কালিম্পং পাহাড় ও ডুয়ার্সে বুকিংয়ে জোয়ার এসেছে। লাটাগুড়ি রিসর্ট অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক দীব্যেন্দু দে কথায়, “পুজোর সময় ডুয়ার্সে খুব একটা পর্যটকের ভিড় থাকে না। এবার অনেকেই যোগাযোগ করছেন। বুকিং চলছে।” তিনি জানান, “অনেক পর্যটক এবার ভুটানের দিকে পা বাড়িয়েছেন। তাঁদের অনেকেই একই যাত্রায় জলদাপাড়া, চিলাপাতা, বক্সা পাহাড়ে ভ্রমণের পরিকল্পনা করেছেন। ফলে আলিপুরদুয়ার জেলার পর্যটনে সুফল মিলবে। ইতিমধ্যে ডুয়ার্সের রিসর্টগুলোতে বেশিরভাগ রুম বুকিং হয়েছে।” এদিকে দার্জিলিং শহরেও পর্যটকদের ভিড় বাড়তে শুরু করেছে। দার্জিলিং হোটেল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বিজয় খান্না জানান, “২৫ সেপ্টেম্বর থেকে ঢল নামবে। এবার বুকিংয়ে ভালো সাড়া মিলছে।” অনেকেই ‘অফবিট ডেস্টিনেশনে’র হোমস্টেতে গুলিতে বুকিং করছেন।

তবে অন্যান্য বার ভিড় আরও থাকে। এবার কিছুটা কম জানা যাচ্ছে দার্জিলিং হোটেল অ্যাসোসিয়েশন সূত্রে। বিজয়বাবু বলেন, “প্রতি বছর পুজোর দু’মাস আগেই হোটেলগুলোর প্রতিটি রুম বুকিং শেষ হয়ে যায়। এতটাই চাহিদা থাকে যে কিচেনে থাকতে দিলেও নাছোড় পর্যটকরা বর্তে যান। এবার রুমের খোঁজে ফোন আসছে। বুকিং চলছে। তবে তুলনায় কম।”

বুকিং হচ্ছে আবার ভিড় কম কেন? ব্যাখা দিয়ে দার্জিলিং হোটেল অ্যাসোসিয়েশনের কর্তারা জানান, উত্তরবঙ্গের পাহাড়-সমতলে অক্টোবর মাস পর্যন্ত বৃষ্টি চলে। এবার পুজো অনেক এগিয়ে। হয়তো তাই অনেকেই প্রবল বৃষ্টির জেরে হড়পা বান ও ভূমিধসের আশঙ্কা করছেন। সেজন্য কোথায় বেড়াতে যাবেন ঠিক করে উঠতে পারেননি। একমত কালিম্পংয়ের হোমস্টে মালিক পাসাং শেরপা। তিনি বলেন, “১০ নম্বর জাতীয় সড়কের কী অবস্থা কারও অজানা নেই। মাঝেমধ্যেই শ্বেতিঝোরা, রবিঝোরা, বিরিকদারা, ২৭ মাইল, ২৯ মাইল এলাকায় ভূমিধস নামছে। অনেক জায়গায় রাস্তা বলে কিছুই নেই। এর কুফল কালিম্পংকে ভুগতে হচ্ছে। ফোন করে প্রত্যেকে রাস্তার কথা জানতে চাইছেন।” যদিও তিনি জানাতে ভোলেননি, যতটা খারাপ ভেবেছিলেন ততটা খারাপ হবে না। নেপালে কেউ যেতে চাইছে না। উত্তর সিকিমেও না। তাই দার্জিলিং, কালিম্পং পছন্দ করছেন।

জানা গিয়েছে, দার্জিলিং পাহাড়ে সাড়ে তিনশো হোটেল রয়েছে। কালিম্পংয়ে দু’শো। পুজোর দিনগুলোতে প্রতিটি হোটেলে ৫০ শতাংশ রুমের বুকিং হয়েছে। দুই পাহাড়ে সাড়ে তিন হাজার রেজিস্টার হোমস্টে রয়েছে। সেখানেও বুকিং চলছে।

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement