সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ঘুমন্ত অবস্থায় পুড়ে মৃত্যু তিন ভাইবোনের। মর্মান্তিক ঘটনার সাক্ষী মুর্শিদাবাদের রানিতলা। মৃতদের মধ্যে একটি সাত বছরের শিশুকন্যা-সহ দুই বালক রয়েছে। এই ঘটনায় নেমেছে শোকের ছায়া।
জানা গিয়েছে, এই তিনজনই পরিযায়ী শ্রমিকের সন্তান। ভাঙনের জেরে ভিটেছাড়া তাঁরা। অস্থায়ী ঘরে বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকছিল তারা। সেখানেই অঘটন। শনিবার রাতে সকলেই ঘুমোচ্ছিল। সেই সময় আচমকা আগুন লেগে যায়। কিছু বুঝে ওঠার আগে ঘুমের ঘোরে মৃত্যু হয় তিন ভাইবোনের। গভীর রাতে আগুন লাগায় স্থানীয়দেও বুঝতে বেশ কিছুটা সময় লেগে যায়। পরে যদিও চিৎকার শুনে ঘটনাস্থলে পৌঁছন তাঁরা। তবে ততক্ষণে সব শেষ। অস্থায়ী ঘরের ধ্বংসস্তূপে পড়ে থাকতে দেখা যায় তাদের। দেহগুলি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে মৃত্যু হয়েছে তাদের।
একে তো নদী ভাঙনে ঘরছাড়া। তার উপর আবার তিন সন্তানকে হারানোয় যন্ত্রণায় যেন বাকরুদ্ধ বাবা-মা। প্রসঙ্গত, চলতি বছর শুরু থেকেই হাঁকিয়ে ব্যাটিং করছে বর্ষা। তার ফলে ফুঁসছে নদীগুলি। এবার তাই নদী ভাঙনের সমস্যায় যেন বিপর্যস্ত মুর্শিদাবাদের একাধিক এলাকা। যদিও ফি বছর এই সমস্যা ভোগ করতে হয় নদী তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের। বারবার প্রশাসনের তরফে নদীবাঁধ ভাঙনের উদ্যোগ অবশ্য নেওয়া হয়েছে। নদীর পাড়ে ভেটিভার ঘাস, সমুদ্রপাড়ের মতো ম্যানগ্রোভ জাতীয় গাছ লাগানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মালদহ-মুর্শিদাবাদ জেলার ভাঙন রোধে দিঘাকে ‘মডেল’ হিসাবে ধরার ভাবনাচিন্তা। কারণ, দিঘায় পাড় সহজে ধসে পড়ে না। নতুন প্রযুক্তিতে কাজ হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, গঙ্গার ভাঙনের কবল থেকে মালদহ ও মুর্শিদাবাদের লক্ষ লক্ষ মানুষকে বাঁচাতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনাও করা হচ্ছে। ঘাস আর ম্যানগ্রোভের পাশাপাশি গঙ্গার পাড় থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূর পর্যন্ত আর নতুন করে কোথাও কোনও বাড়ি তৈরি করা যাবে না বলেও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, হাজার পরিকল্পনা করা হলেও, ভাঙন রোধে নেওয়া উদ্যোগ বাস্তবায়িত হয় না। তার ফলে বছরভর ভোগান্তি লেগেই থাকে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.