Advertisement
Advertisement
Haldia

হলদিয়ায় মা-মেয়েকে জীবন্ত পুড়িয়ে খুন, চারজনকে যাবজ্জীবন সাজা তমলুক আদালতের

২০২০ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি ওই নারকীয় খুনের ঘটনা ঘটেছিল।

Tamluk court sentences four to life in murder of mother and daughter in Haldia
Published by: Suhrid Das
  • Posted:August 2, 2025 5:56 pm
  • Updated:August 2, 2025 5:56 pm   

সৈকত মাইতি, তমলুক: হলদিয়ায় মা মেয়েকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারার অপরাধে চার অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করেছিল আদালত। এদিন চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিল তমলুক আদালত। তমলুকের জেলা ও দায়রা আদালতের বিচারক প্রিয়ব্রত রায় এই সাজা শুনিয়েছেন। ২০২০ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি উত্তর ২৪ পরগনার নিউ ব্যারাকপুরে বাসিন্দা মা-মেয়েকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হয়েছিল। এই মামলার মূল দোষী হলদিয়ার বাসিন্দা শেখ সাদ্দাম হোসেনের সঙ্গে মা ও মেয়ের অবৈধ সম্পর্ক ছিল।

Advertisement

স্থানীয় ও আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০২০ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি ওই নারকীয় খুনের ঘটনা ঘটেছিল। মামলার মূল আসামি হলদিয়ার বাসিন্দা শেখ সাদ্দাম হোসেনের সঙ্গে অবৈধ প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল নিউ ব্যারাকপুরে বাসিন্দা রিয়া ও তাঁর মা রমার। মা ও মেয়েকে হলদিয়ার একটি ভাড়াবাড়িতে নিয়ে এসে রাখে ওই যুবক। সেখানেই ধর্মান্তরের মাধ্যমে মেয়েকে বিয়ে করে সাদ্দাম। আর তাতেই এই ত্রিকোণ প্রেমের সম্পর্কে অবনতি ঘটতে শুরু করে। শুরু হয় তুমুল অশান্তি। আর তাতেই মা ও মেয়েকে চিরতরে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দিতে খুনের পরিকল্পনা করে সাদ্দাম।

এমন অবস্থায় ঘটনার দিন সাদ্দাম ও তার তিন সহযোগী মনজুর আলম মল্লিক, শুকদেব দাস ওরফে শিবু ও আমিনুর হোসেন মিলে ওই মা মেয়েকে মারধর করার পাশাপাশি প্রথমে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচৈতন্য করে। তাঁরা মারা গিয়েছে ভেবে মা-মেয়েকে একটি গাড়িতে করে হলদি নদীর তীরে দুর্গাচক থানার ঝিকুরখালি এলাকাতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই পেট্রোল ঢেলে তাঁদের জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হয়। এদিকে কুণ্ডলি পাকিয়ে ধোঁয়া উড়তে দেখে স্থানীয় কাউন্সিলর ভক্তিপ্রসাদ বালিদা লোকজন নিয়ে ছুটে গিয়েছিলেন। মা ও মেয়ের জ্বলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় পুলিশ। পুড়ে যাওয়া মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়। ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে দুজনের পরিচয় জানা যায়। পুলিশ তদন্তে নেমে একে একে সাদ্দাম ও তার তিন সঙ্গী অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে। তমলুক আদালতে শুরু হয় মামলার শুনানি। মামলা শুরুর ৯০ দিনের মধ্যে পুলিশ আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। দীর্ঘ প্রায় পাঁচবছর ধরে এই মামলার শুনানি চলে। ৪৫ জন সাক্ষী ও একাধিক প্রমাণের উপর ভিত্তি করে গতকাল শুক্রবার সাদ্দাম-সহ চার অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত। আজ শনিবার খুন ও তথ্যপ্রমাণ লোপাটের অপরাধে চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা শোনালেন বিচারক

এমন অবস্থায় দীর্ঘ প্রায় পাঁচ বছর ধরে এই মামলাটি চলার পর প্রায় ৪৫ জন সাক্ষী ও একাধিক প্রমাণের উপর ভিত্তি করে শুক্রবারই জেল হেফাজতে থাকা চার অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত। এরপর এদিন ধৃতদের ভারতীয় দণ্ডবিধি আইনে ৩০২ এবং ২০৪ ধারায় খুন ও তথ্যপ্রমাণ লোপাটের অপরাধে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন বিচারক প্রিয়ব্রত রায়।

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ