Advertisement
Advertisement
CPM

রাজ্য সম্মেলন চলাকালীন আচমকাই হাজির সাসপেন্ডেড তন্ময়! দলীয় শৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন সিপিএমে

তন্ময় ভট্টাচার্যকে সাসপেনশন কি 'লোকদেখানো'? প্রশ্ন উঠছে রাজ্য সম্পাদক সেলিমের ভূমিকা নিয়েও।

Suspended CPM leader Tanmoy Bhattacharya seen at the convention premises at Dankuni during state meet
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:February 24, 2025 9:35 am
  • Updated:February 24, 2025 9:37 am  

রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: সিপিএমের রাজ্য সম্মেলন চলাকালীন আচমকাই ডানকুনির কোল কমপ্লেক্স চত্বরে রবিবার রাতে হাজির পার্টি থেকে সাসপেন্ডেড নেতা তন্ময় ভট্টাচার্য! পার্টির রাজ্য সম্মেলনে জোরদার আলোচনা চলছে তখন, আর সেসময়েই সম্মেলন চত্বরেই কমরেডদের সঙ্গে আলোচনা করতে দেখা গেল তন্ময়কে। যা নিয়ে পার্টির মধ্যেই হইচই। কেন রাজ্য সম্মেলনে পৌঁছে গেলেন বহিষ্কৃত নেতা, সেই ব্যাখ্যা দিতে পারছেন না কেউই।

Advertisement

গত বছর তরুণী সাংবাদিককে হেনস্তার অভিযোগে আলিমুদ্দিন ৬ মাসের জন্য সাসপেন্ড করেছে উত্তর ২৪ পরগনার এই প্রভাবশালী নেতা তথা দমদম উত্তরের প্রাক্তন বিধায়ককে। অথচ রবিবার সেই সাসপেন্ডেড নেতাই হাজির হলেন রাজ্য সম্মেলনের চত্বরে। প্রতিনিধিদের খাওয়ার জায়গায় গিয়ে আড্ডাও দিলেন কিছুক্ষণ। জানা যাচ্ছে, সম্মেলন কক্ষের বাইরে আধ ঘণ্টার মতো ছিলেন তন্ময়। কেউ কেউ অবশ্য এড়িয়েও যান তাঁকে। তন্ময় শুধু বলেন, “সম্মেলনে নেই আমি, কিছু বলব না। সাজসজ্জা খুব সুন্দর হয়েছে।” আর এই ঘটনায় সিপিএমের নীতি আদতে কতটা কঠোর, তা নিয়ে উঠে গেল প্রশ্ন। কেন তন্ময়কে বের করে দেওয়া হল না? কারণ, ওই চত্বরে তো স্বেচ্ছাসেবক ও প্রতিনিধিদেরই শুধুমাত্র থাকার কথা। তাহলে কি তন্ময় ভট্টাচার্যকে ‘লোকদেখানো’ সাসপেন্ড করেছেন মহম্মদ সেলিম? উঠছে এমন প্রশ্নও।

এদিকে, ডানকুনিতে সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে আলোচনা হল দলে দায়দায়িত্ব নিয়ে। দলের খারাপের অবস্থার দায় নিতে হবে নেতাদেরকেও। শুধুমাত্র কর্মীদের ঘাড়ে বন্দুক রাখলে চলবে না। আলোচনায় উঠে এল এটাই। বিভিন্ন জেলার একাধিক প্রতিনিধি অভিযোগ করেন, শাখা কমিটি অথবা বুথ কমিটি সঠিকভাবে কাজ করছে না বলে বারবার উদ্বেগ প্রকাশ করা হচ্ছে। কিন্তু সেখানে রাজ্য বা নেতাদের ভূমিকা কী? কেন তাঁরা শাখা স্তরে গিয়ে দায়িত্ব নেবেন না? কেন নেতাদের ভূমিকা মূল্যায়নে আসবে না? প্রশ্ন তুলেছেন কলকাতা জেলার প্রতিনিধি কৌস্তুভ চট্টোপাধ্যায়। উত্তর ২৪ পরগনা জেলার প্রতিনিধি সত্যসেবী কর বলেন, ”সাম্প্রতিককালে পঞ্চায়েত এবং পুরসভা নির্বাচনে পার্টি যে ফল করেছে তা বিধানসভা বা লোকসভা নির্বাচনে ধরে রাখা যায়নি। এর দায় কার? নিচুতলার কর্মীরাই তো পঞ্চায়েত ভোট করেছে। তাহলে বিধানসভা বা লোকসভার ক্ষেত্রে কেন দায় নেবেন না রাজ্যের নেতারা?” দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ারের প্রতিনিধিদের মত, পাহাড়ের নানা জনজাতি অংশের আশা-আকাঙ্ক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে ভাবলে উত্তরবঙ্গ থেকে বামেদের এভাবে মুছে যেতে হতো না। দলটা দক্ষিণবঙ্গের হয়ে গিয়েছে অনেকদিন ধরেই।

বীরভূমের এক প্রতিনিধির বক্তব্য, কিছু লোক পার্টিতে এসেই গুরুত্ব পাচ্ছেন, আর যাঁরা নিঃস্বার্থভাবে কাজ করে চলেছে, তাঁরা গুরুত্ব পাচ্ছেন না। উঠতি তরুণ প্রজন্মের কিছু নেতাকে পার্টি যেভাবে গুরুত্ব দিয়ে মাথায় তুলে রেখেছে, তাদের দিকেই ইঙ্গিত। হাওড়ার এক প্রতিনিধির বক্তব্য, পার্টির গোড়াটাই ফোপরা হয়ে গিয়েছে। এদিকে, পার্টিতে তরুণ প্রজন্ম বা নতুনদের অন্তর্ভুক্ত করার ক্ষেত্রে যে ফাঁক রয়ে গিয়েছে। অনেকে পার্টিতে এসে আবার চলে যাচ্ছে, সেই দুর্বলতার কথা স্বীকার করে নিলেন রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। নির্বাচনী রণকৌশল ঠিক করতে এই প্রথম রাজ্য সম্মেলনে হবে বিশেষ অধিবেশন।

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement