সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক : ডেঙ্গুর মাঝেই এবার রাজ্যের মানুষের মনে ভয় ধরাচ্ছে স্ক্রাব টাইফাস। বছর দুয়েক ধরে ডেঙ্গুর সঙ্গে নতুন আতঙ্ক, এক ধরনের পোকার কামড় থেকে ছড়ানো এই নয়া রোগ। এই রোগেই আক্রান্ত হয়ে শহরের এক বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হল মুর্শিদাবাদের এক ব্যক্তির।
জানা গিয়েছে, মৃত ওই ব্যক্তির নাম মহাদেব মণ্ডল। তাঁর বয়স পঞ্চাশ বছর। তিনি দাগাপাড়ার বাসিন্দা। বেশ কিছুদিন ধরেই জ্বরে ভুগছিলেন। প্রথমে বহরমপুরের এক হাসপাতালে তাঁকে ভরতি করা হয়েছিল। গা-হাত-পায়ে অসহ্য যন্ত্রণা নিয়ে সেখান থেকে তাঁকে কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে ভরতি করা হয়। বুধবার রাতে তাঁর মৃত্যু হয়। রোগীর পরিবারের দাবি, মঙ্গলবারেও মহাদেব মণ্ডল মোটামুটি সুস্থ ছিলেন। কিন্তু বুধবার তাঁরা হাসপাতালে এসে দেখেন অবস্থার অবনতি হয়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, রোগীর শরীরে স্ক্রাব টাইফাসের জীবাণু পাওয়া গিয়েছিল। সেই অনুযায়ী তাঁরা চিকিৎসা করছিলেন। ভেন্টিলেশনে রেখে ওই ব্যক্তির চিকিৎসা করা হচ্ছিল। চিকিৎসকদের দাবি, ওই ব্যক্তিকে সুস্থ করার জন্য সমস্ত প্রচেষ্টা তাঁরা চালিয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কিছু করা যায়নি। শরীরের প্রায় সমস্ত অঙ্গ প্রত্যঙ্গ বিকল হয়ে মারা যান ওই ব্যক্তি।
জানা যায়, অনেক জ্বরের নেপথ্যে রয়েছে এক ধরনের জীবাণু, যার বাহক মশা নয়। এক ধরনের মাকড়ের (মাইট) লার্ভা। এই মাকড় দংশন করলে শরীরে রিকেটশিয়া সুসুগামুসা নামে এক ধরনের জীবাণু অনুপ্রবেশ করে। যা বংশবিস্তার করে বিকল করতে থাকে লিভার, হার্ট, কিডনি-সহ একাধিক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ। মাকড়ের বাস বনে-বাদাড়ে, ঘাসে-ঝোপ-ঝাড়ে। উড়তে পারে না। তবে দু’ থেকে আড়াই ফুট পর্যন্ত লাফাতে পারে। মাকড়ের কামড়ে ৪-৫ মিলিমিটার মতো আকারে পুড়ে যাওয়ার মতো কালো দাগ হয়। ক্ষতস্থানে জ্বালা করে। ফুসকুড়ি হয়। সঙ্গে জ্বর, সর্দি-কাশি, মাথাব্যথা। কামড়ের ১৪-১৫ দিন পরেও এই সব উপসর্গ দেখা দিতে পারে। শিশুদের প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, তাই তাদের উপর বেশি প্রভাব ফেলে এই ব্যাকটেরিয়া। যে ব্যাকটেরিয়ার কারণে স্ক্রাব টাইফাস হয় তার নাম ওরিয়েনসিয়া শুশুগামুসি। ১৯৩০ সালে জাপানে এই ব্যাকটেরিয়ার প্রথম অস্তিত্ব মেলে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.