কাগজ দেখাচ্ছেন বিজেপি বিধায়ক। নিজস্ব চিত্র
জ্যোতি চক্রবর্তী, বনগাঁ: এসআইআর নিয়ে জোর চর্চা হচ্ছে। বাসিন্দারা ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় তাঁদের নাম আছে কিনা খোঁজাখুঁজি করছেন। সেই তালিকা দেখতে গিয়ে সামনে এল বিস্ফোরক অভিযোগ। বনগাঁ উত্তরের বিজেপি বিধায়ক অশোক কীর্তনীয়ার বাবা-মায়ের নাম সেই বছর ভোটার তালিকায় নেই বলে অভিযোগ উঠল। এই বিষয়ে বনগাঁ মহাকুমা শাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছে অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসংঘ। শুধু তাই নয়, বিধায়ক পদ খারিজের দাবিও তোলা হয়েছে। ঘটনায় শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোড়। তবে এই অভিযোগ মানতে চায়নি বিজেপি বিধায়ক।
রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় ২০০২ সালের ভোটার তালিকা খতিয়ে দেখছেন বাসিন্দারা। বনগাঁতেও একইভাবে তালিকা দেখা হচ্ছে। অভিযোগ উঠেছে, বনগাঁ ব্লকের ঘাট বাউর অঞ্চলের ৩৫৪ নম্বর তালিকায় স্থানীয় বিজেপি বিধায়কের বাবা-মায়ের ছবি নেই। অথচ, ওই ভোটার তালিকায় নাম আছে অশোক কীর্তনীয়ার। বেআইনিভাবে অশোক কীর্তনীয়া ভোটার তালিকায় নাম তুলেছেন। ২০১১ সালের বনগাঁ পুরসভার গান্ধীপল্লি এলাকায় তাঁদের নাম রয়েছে। এই অভিযোগ তুলে বিক্ষোভে নেমেছে মতুয়া-মহাসংঘের বনগাঁ শাখার সদস্যরা। শুধু তাই নয়, এই বিষয়ে বনগাঁ মহাকুমা শাসকের কাছে লিখিত অভিযোগও দায়ের করা হয়েছে। এদিন, মহকুমা শাসকের দপ্তরের সামনে সংঘের তরফে বিক্ষোভও দেখানো হয়।
মতুয়া মহাসংঘের বনগাঁ শাখার সম্পাদক প্রসেনজিৎ বিশ্বাস বলেন, “নির্বাচন কমিশনের প্রকাশ করা ২০০২ সালের ভোটার লিস্টে বিজেপি অশোক কীর্তনীয়ার নাম থাকলেও তাঁর মা বাবার নাম নেই। তারপর অনেক খোঁজাখুঁজির পর ২০১১ সালের ভোটার লিস্টে তাঁর বাবা-মায়ের নাম দেখতে পাই। তিনি একজন বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী হয়ে কীভাবে আইনসভার সদস্য হতে পারেন?” তিনি আরও বলেন, “আমরা জেলাশাসকের কাছে ডেপুটেশন জমা দিয়েছি। অবিলম্বে তাঁর বিধায়কের পদ থেকে ইস্তফা ও আইনানুক ব্যবস্থার দাবি করছি।” যদিও সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিজেপি বিধায়ক। তিনি বলেন, “তাঁর বাবা ১৯৫০ সালে বাংলাদেশ থেকে এসেছেন। সমস্ত কাগজপত্র আছে। ১৯৯৩ সালে মা-বাবার ভোটার লিস্টে নাম ওঠে।” তিনি আরও বলেন, “এবার কেন ২০০২ সালে ওঠেনি, সেই সময়কার বাম নেতৃত্বরা জানেন। এসবই তৃণমূলের আমাকে বিরক্ত করার পরিকল্পনা। তাঁরা তাঁদের কাজ করবে। আমি আমার কাজ করব।”
এ বিষয়ে তৃণমূল বনগাঁ সংগঠনিক জেলা সভাপতি বিশ্বজিৎ দাস বলেন, “২০০২ সালে অশোক কীর্তনীয়ার নাম আছে। কিন্তু তাঁর মা-বাবার নেই কেন? এই উত্তর বিধায়ক ও বিজেপিকে দিতে হবে। এমন ঘটনা প্রথম দেখলাম যে মা-বাবার আগে সন্তান ভোটার হয়ে যাচ্ছে। বিজেপি বাংলায় এনআরসি, সিএএ-এর নামে চক্রান্তের সৃষ্টি করছে।” বিজেপি বনগাঁ সংগঠনিক জেলা সভাপতি বিকাশ ঘোষ বলেন, “যতদূর জানি, অশোক কীর্তনীয়ার বাবা ১৯৬০ থেকে ৬৫ সালের মধ্যে এদেশে এসেছেন। ১৯৯৩ সালে ভোটার কার্ডে তাঁদের নাম ওঠে। এই অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.