প্রতীকী ছবি
রঞ্জন মহাপাত্র, কাঁথি: মহারাষ্ট্র, দিল্লির পর এবার পড়শি রাজ্য ওড়িশা। বাংলায় কথা বলার জন্য বাংলার বাসিন্দাদের দাগিয়ে দেওয়া হল বাংলাদেশি নামে! শুধু তাই নয়, বাংলাদেশি সন্দেহে আটকে রাখা হয়েছে বাংলার চারজনকে। ঘটনা জানাজানি হতেই তাঁদের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। আসল পরিচয়পত্র থাকলেও সেসব ওড়িশা পুলিশ কানে তোলেনি বলে অভিযোগ। ওই চারজন পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুরের বাসিন্দা। পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক জানান, তাঁদের ছাড়িয়ে আনার প্রক্রিয়া চলছে।
ভগবানপুর থানার কোটবাড়ের বাসিন্দা শেখ সপু, তাঁর দুই ছেলে শেখ সাহেন, শেখ সাবুল ও প্রতিবেশী মতিবুল মহম্মদ। পড়শি রাজ্য ওড়িশায় তাঁরা স্টিলের বাসনপত্র ফেরি করেন। সেকারণে কটকের নিশ্চিন্তাকুইলির সুকরপাড়া এলাকায় ঘরভাড়া নিয়ে থাকেন তাঁরা। কাজের সূত্রে তাঁরা বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বেড়ান। নিজেদের মধ্যে বাংলাতেই তাঁরা কথা বলেন। গত ২৪ জুন রাত ১২টা নাগাদ পুলিশ ওই ভাড়াবাড়িতে হানা দেয়। বাংলার বাসিন্দারা সঙ্গে থাকা পরিচয়পত্র নিশ্চিন্তাকুইলি থানার তদন্তকারীদের দেখান। তাঁরা পূর্ব মেদিনীপুরের বাসিন্দা। সেই কথাও বলা হয়। অভিযোগ, সেসব কিছুই কানে শোনেনি পুলিশ। বাংলাদেশি সন্দেহে তাঁদের পাকড়াও করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর থেকে তাঁরা আটক হয়ে আছেন বলে খবর।
ওই চারজনের সঙ্গে সেখানেই থাকতেন কালু শেখ। তিনি দিন কয়েক আগে পূর্ব মেদিনীপুরের বাড়িতে ফিরেছিলেন। ওড়িশা থাকলে তাকেও পাকড়াও করা হত। এমনই মনে করছেন কালু। ওড়িশা পুলিশের হাতে আটক চারজন সম্পর্কে কালুর আত্মীয়। তিনি বলেন, ” বর্তমানে চারজনকে কটকের আটঘর এলাকায় ডিটেনশন ক্যাম্পে আটক করে রাখা হয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। এখন আমরা কী করব বুঝতে পারছি না। এখানকার পুলিশ-প্রশাসন আমাদের ভরসা।” আটক ওই চারজনের পরিবারের সদস্যরাও ঘটনায় প্রবল দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। পূর্ব মেদিনীপুরে পুলিশ-প্রশাসনের সঙ্গে এই বিষয়ে যোগাযোগ করা হয়েছে।
পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক পুর্ণেন্দু মাজি বলেন, “ওড়িশার ডেপুটি কমিশনারকে ইনকোয়ারি রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে। তাঁদের ছাড়ার প্রক্রিয়া চলছে।” এগরার এসডিপিও দেবীদয়াল কুণ্ডু বলেন, “এখনও পর্যন্ত এই ব্যাপারে কোনও অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে,” ভগবানপুর-১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তৃণমূল নেতা অরূপসুন্দর পণ্ডা বলেন, “বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলি বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের বাংলাদেশি সন্দেহে আটক করে রাখছে। তাঁদের কোনও নিরাপত্তা নেই। ওই পরিবারগুলির লোকজন সেখানে উকিল নিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু সেখানকার জেলা পুলিশ সুপার কোনও কথা বলতেই রাজি হচ্ছেন না।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.