দোকানের সিসিটিভি ফুটেছে দেখা গিয়েছে দুষ্কৃতীদের।
অভ্রবরণ চট্টোপাধ্যায়, শিলিগুড়ি: সোনার দোকানে ডাকাতির তদন্ত করতে নেমে চাঞ্চল্যকর তথ্য পুলিশের হাতে। দুষ্কৃতীরা মাস কয়েক ধরে ফাঁসিদেওয়া এলাকায় বাড়িভাড়া করেছিল। তারা কিছুদিন যাবত শিলিগুড়ি এসে ওই দোকানে নজরদারি চালায়। রেইকি করা হয় এলাকাতেও। এরপর রবিবার পরিকল্পনামাফিক লুট চলে। ধৃতরা এলাকা ছেড়ে দ্রুত চম্পট দেয়। পুলিশ গতকালই তাড়া করে দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছিল। ধৃত দুজনের নাম সফিক খান, রাজস্থানের বাসিন্দা ও মহম্মদ সামসাদ, বিহারের বাসিন্দা।
ধৃতদের সোমবার শিলিগুড়ি আদালতে তোলা হয়। বিচারক তাদের সাতদিনের পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। আইনজীবী মানিক সাহা বলেন, “১১ কোটি টাকার গয়না লুট হয়েছে। সাতজনের একটি দল এই কাণ্ড ঘটিয়েছে। তাদের খোঁজে পুলিশকে বাইরে যেতে হবে।” তবে শহরে বহিরাগতদের আনাগোনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন মেয়র গৌতম দেব। গতকালের এই ডাকাতির পর আতঙ্কিত ব্যবসায়ীরা।
উত্তর-পূর্ব ভারতের করিডর হিসেবে পরিচিত শিলিগুড়ি। নিত্যদিন বাইরের রাজ্যের মানুষজনের যাতায়াত। বেশিরভাগ কর্মসূত্রে যান সেখানে। তিনদিনের ব্যবধানে এটিএম লুট ও সোনার দোকানে চুরিতে আতঙ্ক ছড়িয়েছে শহরে। দুটি ক্ষেত্রেই পুলিশ জানতে পেরেছে, যারা এই কাণ্ড ঘটিয়েছে তারা সকলেই ভিনরাজ্যের। দুষ্কৃতীদের খোঁজে পুলিশের বেশ কয়েকটি দল দিল্লি, রাজস্থান, বিহার যাচ্ছে। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করেও একাধিক তথ্য পেতে চাইছেন তদন্তকারীরা। শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব বলেন, “পুলিশ খুব ভালো কাজ করছে। ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গেই দুজন গ্রেপ্তার হয়েছে। তবে শিলিগুড়ি শহরের চারিদিকে সীমান্ত। ভিনরাজ্যের লোকজনের আনাগোনা লেগেই থাকে। তাই কেন্দ্রকেও আলাদা করে গুরুত্ব দিতে হবে। আমি গোটা বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানিয়েছি। শহরের পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে কথা বলেছি। তাঁরা বলেছেন, বাকিদেরও ধরা হবে।”
বিধান মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক বাপি সাহা বলেন, “শহরের প্রাণকেন্দ্র হিলকার্ট রোড। সেখানে যে ঘটনা ঘটল, তাতে ভয় তো লাগবেই। আমরা সকলেই আতঙ্কিত।” দুষ্কৃতীদের দল মাস কয়েক ধরে ফাঁসিদেওয়া এলাকায় স্বর্ণলতা ঘোষ নামে এক মহিলার বাড়িতে তারা ভাড়া ছিল। আটঘাট বেঁধেই দুষ্কৃতীরা এই অপারেশন চালিয়েছে, এমনই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। আর কোন কোন অপরাধ তারা ঘটিয়েছে? সেই বিষয়গুলোও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দুষ্কৃতীরা যে এলাকায় ছিল, সেখানেও বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। স্বর্ণলতা ঘোষ বলেন, “আমাদের বাড়িতে ভাড়া ছিল ঠিকই। কিন্তু তারা যে এই কাণ্ড ঘটাবে, তা আমরা জানব কী করে।” ডেপুটি পুলিশ কমিশনার বিশ্বচাঁদ ঠাকুর বলেন, “এখনও অবধি দু’জন গ্রেপ্তার হয়েছে। যারা এই কাণ্ড ঘটিয়েছে, তারা সকলেই বাইরের। বাকিদেরও দ্রুত গ্রেপ্তার করা হবে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.