মৃত বাপন দাস।
রমণী বিশ্বাস, তেহট্ট: সংসারের অনটন। এলাকার মহাজনের থেকে চড়া সুদে টাকা ধার নিয়েছিলেন যুবক। অভিযোগ সেই টাকা সময় মতো দিতে পারায় বাড়ির দলিল ছিনিয়ে নেয় মহাজনরা। মারধর, অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজও করা হয় বলেও অভিযোগ। পরিবার ও গ্রামবাসীর সামনে এই অপমান মেনে নিতে না পেরে আত্মঘাতী যুবক। মঙ্গলবার চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে নদিয়ার নাকাশিপাড়া থানা এলাকায়।
মৃত যুবকের নাম বাপন দাস। বয়স ৩৫। তিনি নাকাশিপাড়া থানার বহিরগাছি গ্রামের বাসিন্দা। পেশায় কাঠমিস্ত্রি। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, কিছুদিন আগে সংসারে অনটনের কারণে এলাকার কয়েকজন মহাজনের থেকে চড়া সুদে টাকা ধার নিয়েছিলেন। তেমন কাজ না থাকায় সময় মতো সুদের টাকা দিতে পারছিলেন যুবক। অভিযোগ, টাকা দিতে না পারায় বাড়িতে এসে লাগাতার হুমকি দিচ্ছিলেন সুদের কারবারিরা।
মঙ্গলবারও মহাজন বাপনের বাড়িতে এসে চড়াও হয় তাঁরা। অকথ্য ভাষায় গালিগালাজের সঙ্গে টাকার জন্য চাপ দিতে থাকে। যুবক দিন কয়েকের সময় চাওলেও সুদের কারবারিরা তা দিতে রাজি হননি বলে অভিযোগ। এরপরই বাপনকে মারধর করে বাড়ির দলিল ছিনিয়ে নেন বলে দাবি পরিবারের। এরপরই অপমানে আত্মহত্যা করেন ওই যুবক। খবর পেয়ে মৃতদের উদ্ধার করে ঘটনা তদন্ত শুরু করেছে নাকাশিপাড়া থানার পুলিশ। ঘটনার পর অভিযুক্তরা পলাতক।
মৃত বাপনের বাপনের জামাইবাবু প্রদীপ দাস বলেন, “কয়েক মাস আগে গ্রামের এক মহাজনের থেকে দশ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছিল। কিন্তু সেই সুদ কারবারি দাবি করতে থাকেন তিনি ১ লক্ষ টাকা পাবে। আরও একজনের থেকে ৫০ হাজার টাকা ধার নিয়েছিল বাপন। কিন্তু মহাজন দাবি করতে থাকেন তিন লক্ষ টাকা পাবেন তিনি। দু’জনই আজ, সকালে বাড়িতে এসে টাকা দাবি করতে থাকে। শালাবাবু দুই দিন সময় চেয়েছিল। কিন্তু তারা সময় না দিয়ে অশ্লীল ভাষা ও মারধর করে বাড়ির দলিল কেড়ে নেয়। যাওয়ার সময় ওরা বলে যায় তুলে নিয়ে গিয়ে রেজিস্ট্রি অফিসে নিয়ে গিয়ে জমি লিখে নেব। এই অপমান সইতে না পেরে ও আত্মহত্যা করেছে।” বাপনের বৃদ্ধ বাবা বিশ্বজিৎ দাস বলেন, “ওরা গালাগালি করে বাড়ির দলিল কেড়ে নিয়ে যায়। এই অপমান সইতে না পেরে ছেলে আত্মহত্যা করল। ছেলেকে ফিরে পাব না, এদের যেন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয়।” পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.