নিজস্ব ছবি
শেখর চন্দ্র, আসানসোল: কুলটির বিজয়া সম্মিলনীতে দেখা গেল অদ্ভুত দৃশ্য। নিজের দলের নেতাদের ওপরই বিশ্বাস নেই! গোষ্ঠী কোন্দল আটকাতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের নামে প্রকাশ্যে মঞ্চে ‘দিব্যি’ দিতে হল তৃণমূল জেলা সভাপতিকে। নিজেদের কোন্দল আটকাতে শেষ দাওয়াই মুখ্যমন্ত্রীর নাম নিয়ে দিব্যি খাওয়ানো।
কুলটির বিজয়া সম্মিলনীতে ঘটেছে এই ঘটনা। প্রকাশ্যে জেলা সভাপতি তথা বিধায়ক নরেন চক্রবর্তীকে বলতে হল, “সবাইকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিব্যি দিয়ে চললাম। যদি এই দলকে ভালোবাসেন, যদি মনে করেন এই দলের জন্যই আপনাদের সম্মান। তাহলে এই পাঁচ-ছয় মাস প্রাণ দিয়ে লড়াই করুন।” নরেনের এই বক্তব্য এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল। ভিডিও ভাইরাল হতেই, কটাক্ষ ও সমালোচনা শুরু করেছে বিরোধীরা। বিজেপি নেতৃত্বের কটাক্ষ, “নিজের দলের নেতাদের উপর এত অবিশ্বাস? মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর নাম নিয়ে দিব্যি দিতে হচ্ছে?”
গত পাঁচ বছর ধরে কুলটিতে বেশ চাপে রয়েছে তৃণমূলের সংগঠন। বিধানসভার দখল নিয়েছে বিজেপি। লোকসভা আসনে শত্রুঘ্ন সিনহা জয়ী হলেও কুলটিতে সমস্যায় পড়েছে তৃণমূল। অথচ এই রাজ্যে তৃণমূলের প্রথম জয় পাওয়া দুটি বিধানসভার মধ্যে কুলটি ছিল অন্যতম। ১৫ বছর ধরে কুলটি পুরসভা ও বিধানসভা ছিল তৃণমূলের দখলে। রাজনৈতিক মহলের ধারণা প্রবল গোষ্ঠীদ্বন্ধের কারণেই এই বিধানসভার দখল হারিয়েছে তৃণমূল। সেই কারণেই এবার গোষ্ঠী কোন্দল রুখতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে দিব্যি দিতে হলো জেলা সভাপতিকে।
এরপর তিনি আরও একটি বিতর্কিত কথা বলেন প্রকাশ্যে মঞ্চে। নরেন চক্রবর্তী বলেন, “আমি এখানে গল্প করতেও আসি না, আর তোলা তুলতেও আসি না। যারা দলের সঙ্গে থাকবেন না, সব চাবি মেরে নেবো কিন্তু। দলের কাজ করবেন না আর ফুর্তি মারবেন এটা সম্ভব নয়।”
এরপরেই বিরোধীরা প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে। বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য এবং প্রাক্তন মেয়র জিতেন্দ্র তেওয়ারি বলেন, “নিজের দলের নেতাদের উপর এত অবিশ্বাস? মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীর নাম নিয়ে দিব্যি দিতে হচ্ছে? আর কী বলছেন আপনি? আপনি তোলা তুলতে আসেন না? পান্ডবেশ্বরে আপনি এত তোলা তুলেন, যে আর কুলটি আসার দরকার নেই তো।” তেওয়ারি আরও বলেন, “আর যারা দল করবে তারা তোলা তুলতে পারবে, বাকিদের জন্য আপনি চাবি দিয়ে দেবেন। এটাই না? কোন জায়গায় নিয়ে গেলেন! আপনাদের মতো লোকেরা যখন নেতা হয়ে যায়, তখন দলটার অবস্থা যা হয় আসানসোলের মানুষ দেখছে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.