শান্তনু কর, জলপাইগুড়ি: সবে সবে অন্ধকার নামছে। বিকেল গড়িয়ে সন্ধে হচ্ছে। বাড়ির সামনে ঘুরে ফিরে বেড়াচ্ছিল খুদে। মা-সহ পরিবারের অন্যান্যরা কাজে ব্যস্ত। বিপদ যে চা বাগানে ওঁৎ পেতে বসে রয়েছে, তা হয়তো টের পাননি কেউ। মাত্র কিছুক্ষণের মধ্যেই অঘটন। বাড়ির উঠোন থেকে উধাও খুদে। স্থানীয়দের দাবি, চিতাবাঘ তুলে নিয়ে গিয়েছে তাঁকে। বেশ কিছুক্ষণ পর তার দেহ উদ্ধার হৃয়। ডুয়ার্সের বানারহাট ব্লকের কলাবাড়ি চাবাগানের ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
মৃত বছর তিনেকের আয়ূষ ওঁরাও। প্রত্যক্ষদর্শী এক ব্যক্তির দাবি, আচমকা একটি চিতাবাঘ আসে। শিশুটিকে মুখে করে তুলে নিয়ে চলে যায়। ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। শিশুর খোঁজে তল্লাশি শুরু করেন স্থানীয়রা। রাতে বাগানের ১৮ নং সেকশনে শিশুর দেহ উদ্ধার হয়। দেহে বেশ কিছু স্থানে ক্ষতচিহ্ন রয়েছে। ঘটনায় ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয়রা। বনকর্মীরা পৌঁছলে ঘিরে বিক্ষোভ দেখায় তাঁরা। খবর পেয়ে বানারহাট থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। শিশুর দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়।
উত্তরবঙ্গে চা বাগান লাগোয়া এলাকায় চিতাবাঘের সংখ্যা যেন ক্রমশ বাড়ছে। তার আতঙ্কে মাঝেমধ্যেই চা বাগানে কাজ বন্ধ হয়ে যায়। গত দু’মাসে কলাবাড়ি এলাকা থেকে ৩ টি চিতাবাঘ ধরা পড়েছে বলেই বনদপ্তর সূত্রে খবর। কিছু এলাকায় এখনও খাঁচা পাতা রয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, বনাঞ্চল সংলগ্ন বসতি এলাকার নিরাপত্তা নিয়ে কারও কোনও মাথাব্যথা নেই। সে কারণে বারবার বন্যপ্রাণীর হামলা প্রাণ বলি দিতে হচ্ছে তাঁদের। এর আগে, ২০১৯ ও ২০২৪ সালে একইভাবে শিশুদের তুলে নিয়ে গিয়েছিল চিতাবাঘ। ফের এমন ঘটনায় ক্ষোভে ফেটে পড়েছে গোটা এলাকা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.