Advertisement
Advertisement
পতঙ্গ

জামুরিয়ায় তাণ্ডব চালানো রাক্ষুসে পোকারা পঙ্গপাল নয়, পতঙ্গবিদদের তথ্যে স্বস্তি

কিছুদিন ধরেই জামুরিয়াবাসীদের মনে আতঙ্ক ধরিয়েছিল এই পতঙ্গ।

Insects swarming at Jamuria not locusts, said report
Published by: Tiyasha Sarkar
  • Posted:June 15, 2020 6:19 pm
  • Updated:June 15, 2020 6:19 pm  

গৌতম ব্রহ্ম: আসানসোলের জামুরিয়ায় তাণ্ডব চালানো রাক্ষুসে পোকারা পঙ্গপাল (Locust) নয়, বরং একধরণের রঙিন গঙ্গাফড়িং। যারা মূলত আকন্দ গাছের পাতা খেতে ভালবাসে। এমনটাই জানালেন পতঙ্গবিদরা। তাঁদের পর্যবেক্ষণ, বাংলার কিছু কৃষি আধিকারিকের উলটোপালটা মন্তব্য কৃষকদের মধ্যে পঙ্গপাল নিয়ে অযথা আতঙ্ক তৈরি করছে। এই সব বন্ধ হওয়া দরকার। পতঙ্গবিদদের বক্তব্য, “চাক্ষুষ না করে প্রজাতিকে চিহ্নিত করা ঠিক নয়। ‘ফিজিক্যাল ভেরিফিকেশন’ খুব জরুরি।

Advertisement

১৪ জুন জামুরিয়ায় রঙ্গিন গঙ্গাফড়িংয়ের একটি দলকে সবুজ পাতা নিকেশ করতে দেখা যায়, যেগুলিকে অনেকে পঙ্গপাল বলে ভুল করেন। স্বাভাবিকভাবেই সাধারণ মানুষের মনে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়। পতঙ্গবিদ অরিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছেন, “এই রঙিন গঙ্গাফড়িংয়ের প্রজাতিটি আদতে Poekilocerus pictus যা সাধারণত আকন্দ গাছের পাতা খেয়ে থাকে। পঙ্গপালের মতো এরাও Orthoptera বর্গের অন্তর্গত। কিন্তু গোত্র আলাদা ( P. pictus, Pyrgomorphidae গোত্রের)। অরিজিৎবাবুর পর্যবেক্ষণ, মরু-পঙ্গপাল (ডেজার্ট লোকাস্ট) যা বর্তমানে পশ্চিম ও উত্তর ভারতে হানা দিয়ে চাষের ব্যাপক ক্ষতি করে চলেছে তা আসলে Acrididae গোত্রভুক্ত। কাজেই চাষিদের এখনই দুশ্চিন্তার কোনও কারণ নেই। জামুড়িয়ায় দেখা পাওয়া এই রঙ্গিন গঙ্গাফড়িংগুলির চাষের জমিতে হামলা চালিয়ে ক্ষতি করার বিশেষ সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।

রবিবারই জামুড়িয়ার পড়াশিয়া এলাকায় পঙ্গপাল-হানার খবর রটে যায়। আতঙ্ক ছড়ায় চাষিদের মধ্যে। জানা যায়, এলাকার শিব মন্দির সংলগ্ন জঙ্গলে গাছ-গাছালির সবুজ পাতা খেয়ে ফেলছে একদল পোকা। যারা পঙ্গপালের মতোই দেখতে। ন্যাড়া গাছে ঘুরে ঘুরে বেড়াচ্ছে হাজার হাজার পোকা। এই ছবি আতঙ্ক ছড়ায় স্থানীয়দের মধ্যে। একে করোনা, তার উপর এই রাক্ষুসে পোকা। দাবানালের মতো আতঙ্ক ছড়াতে থাকে। পল্লবিত হয় গুজব। পঙ্গপাল ঢুকে শেষ করে দিচ্ছে যাবে সবকিছু। টনক নড়ে প্রশাসনের। জামুড়িয়ার বিডিও কৃষানু রায় জানান, “ওই কীটগুলি পঙ্গপাল কিনা তা খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে জেলা কৃষি দপ্তরকে। তারপরেই ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।”

Locust

[আরও পড়ুন: লকডাউনে পেটের জ্বালা মেটাতেই ডাকাতি! উত্তরপাড়া ব্যাংক লুঠে প্রকাশ্যে নয়া তথ্য]

উল্লেখ্য, আজ পর্যন্ত বাংলায় যতবার পঙ্গপাল হানা হয়েছে তারজন্য এই ‘ডেসার্ট লোকাস্ট’-ই দায়ী। এরা তিনটি রাস্তা দিয়ে বাংলায় ঢোকে। নেপাল-বিহার সীমান্ত হয়ে উত্তরবঙ্গ দিয়ে, ঝাড়খণ্ড হয়ে বাঁকুড়া-পুরুলিয়া দিয়ে কিংবা উপকূল বরাবরও। এই তিনটিই রাস্তা। প্রসঙ্গত, আফ্রিকা থেকে আসা মরু-পঙ্গপালের দল জয়পুর, নাগপুর, এলাহাবাদে ঢুকে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করে ফসলের। পঙ্গপালের দলটি ৩ কিমি চওড়া, ১ কিমি লম্বা। স্বভাবতই প্রবল আতঙ্ক ছড়িয়েছে চাষিদের মধ্যে। এরই মধ্যে জামুরিয়ায় গঙ্গাফড়িংয়ের তাণ্ডব। রজ্জুত সর্পভ্রম!

[আরও পড়ুন: বৃষ্টি থেকে রেহাই মিলবে রাজ্যবাসীর? জেনে নিন কী বলছে হাওয়া অফিস]

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement