গবেষক গৌতম চট্টোপাধ্যায়।
সুমন করাতি, হুগলি: ছোট্ট ঘরের মধ্যেই বাবা-মা, ভাই-বোনদের নিয়ে ছেলেবেলা কেটেছে। অত্যন্ত কষ্টের মধ্যে পড়াশোনা করে বেড়ে ওঠা। তিনিই এখন নাসার গবেষণা, বিজ্ঞানের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত। শুধু তাই-ই নয়, নাসার তরফে এবার তাঁকে সম্মানিত করা হচ্ছে। নাসার অন্যতম শ্রেষ্ঠ সম্মান ‘নর্থস্টার’ পুরষ্কার পাচ্ছেন বাঙালি গবেষক ডঃ গৌতম চট্টোপাধ্যায়। নাসার আকাশে বাংলার ধ্রুবতারা! এই খবর জানার পরেই হুগলির কোন্নগরের বাড়িতেও খুশির জোয়ার।
কোন্নগরের নবগ্রাম এলাকায় বাড়ি গৌতম চট্টোপাধ্যায়ের। বাবা কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মী হলেও ছোটবেলায় আর্থিক অবস্থা ভালো ছিল না। অত বড় সংসার সামলাতে সমস্যা হলেও বাবা কিছু বুঝতে দিতেন না। জানা গিয়েছে, ছোটবেলায় অনেক দিনই ঘরে ইলেকট্রিক না থাকায় হ্যারিকেন জ্বালিয়ে পড়তে হয়েছে গৌতম চট্টোপাধ্যায়-সহ ভাই-বোনদের। ছোটবেলা থেকে গৌতমের বিজ্ঞানের প্রতি অসীম আকর্ষণ। কোন্নগর এলাকার স্থানীয় স্কুলের কৃতি ছাত্র হিসেবেই পড়াশোনা। এরপর শিবপুর বিই কলেজ থেকে ইলেক্ট্রনিক্স টেলি কমিউনিকেশন নিয়ে পড়াশোনা। পরিবারের সামর্থ ছিল না উচ্চশিক্ষা করানোর। কিন্তু আরও অনেক বেশি উচ্চশিক্ষার তাগিদ ছিল তাঁর। পড়াশোনার জন্য স্কলারলিশ নিয়ে বিদেশযাত্রা।
পড়শোনা শেষে টাটা ইনস্টিটিউট অফ ফাউন্ড মেডেল রিসার্চ সংস্থায় কাজ শুরু করেন গৌতম চট্টোপাধ্যায়। তবে তাঁর অনেক আগে থেকেই লক্ষ্য ছিল আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র নাসায় গবেষক হিসেবে কাজ করার। একসময় তিনি পড়াশোনার জন্য পাড়ি দেন বিদেশে। ক্যালিফোর্নিয়ার ইউনিভার্সিটি থেকে পিএইচডি করেন গৌতমবাবু। এরপর নাসায় কাজের সুযোগও এসে যায়। একসময় আমেরিকার নাসা থেকেই ডাক পেলেন তিনি। কালবিলম্ব না করে সেখানে কাজে যোগ। গত ২৫ বছর ধরে নাসার একাধিক গবেষণার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন তিনি। একসময় এই বাঙালি বিজ্ঞানী, গবেষক হিসেবে নাসায় অন্যতম অগ্রণী হয়ে ওঠেন। নাসার জেট প্রপালশন ল্যাবটারির এক উজ্জ্বল নাম। শুধু গবেষণা নয়, আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান জগতেও তিনি ইতিমধ্যে অসামান্য সম্মান পেয়েছেন। গত বছর নিউইয়র্ক থেকে তিনি পেয়েছেন আমস্ট্রং মডেল রেডিও ওয়ালসের বিজ্ঞান বিজ্ঞানের অসামান্য অবদানের জন্য বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সম্মান। আরও একজন বাঙালি বিদেশে কৃতিত্বের অধিকারী হলেন।
এই খবর পাওয়ার পর হুগলির কোন্নগরের বাড়িতেও আনন্দ, উচ্ছ্বাস দেখা গিয়েছে। কোন্ননগরে তাঁর দিদি ও অন্যান্যরা থাকেন। বাঙালি বিজ্ঞানীর সাফল্যে খুশি এলাকার বাসিন্দারাও।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.