Advertisement
Advertisement

সম্প্রীতির নজির, চাঁদা তুলে বৃদ্ধের সৎকার করলেন হিন্দু-মুসলিমরা

গত কয়েকদিন ধরে বার্দ্ধক্যজনিত কারণে ভুগছিলেন তিনি।

Hindu-Muslims arrange old man's last rites

ছবি: প্রতীকী

Published by: Sulaya Singha
  • Posted:November 4, 2018 10:11 am
  • Updated:November 4, 2018 2:47 pm   

নিজস্ব সংবাদদাতা, তেহট্ট: এই মুহূর্তে সাতকূলে তাঁর কে কোথায় আছে কেউ জানে না। নিজে হিন্দু হয়েও থাকতেন মুসলিম বাড়িতে। কেউ কোনওদিন জানতে চায়নি তাঁর পরিচয়। বয়সের কোনও গণ্ডি তাঁকে বাঁধতে পারেনি। তাই নির্দ্বিধায় সর্বদা মানুষের বিপদে পাশে দাঁড়াতেন। ভোটার কার্ডের হিসেব বলছে, তাঁর বয়স ছিয়াশি। তবে এলাকার মানুষের বক্তব্য অনুযায়ী, পলাশিপাড়া থানার ধাওয়া পাড়ার বিষ্ণুপদ বিশ্বাসের বয়স একশো পেরিয়ে গিয়েছে। মানুষটিকে সকলেই ভালবাসতেন। শনিবার মৃত্যু হয় তাঁর। আর এমন মানুষের শেষকৃত্যে মুছে গেল জাতি-ধর্ম-বর্ণের ভেদাভেদ। ঠিক যেভাবে সকলের পাশে দাঁড়াতেন তিনি, সেভাবেই বিদায়বেলায় সবাইকে পাশে পেলেন বৃদ্ধ।

Advertisement

[ছুটি নেওয়ায় আধিকারিকদের বিদ্রুপ, অভিমানে আত্মঘাতী ট্রেনচালক]

রওশন আলি শেখের বাড়িতে একাই থাকতেন। মানুষের দেওয়া খাবার, পোশাকে তাঁর জীবন কেটে যেত। মানুষের মধ্যে তিনি কখনও ভেদাভেদ করেননি। তাঁর প্রয়াণেও তাই কেউ ভেদাভেদ করল না। শনিবার প্রিয় বিষ্ণুপদ বিশ্বাসের মৃত্যুতে হিন্দু মুসলমান সকলেই একজোট হয়ে চাঁদা তুলে সৎকার করলেন। জীবীত অবস্থায় তো বটেই, তাঁর মৃত্যুতেও অপূর্ব সম্প্রীতি রচিত হল পলাশিপাড়া পলসুন্ডা ধাওয়াপাড়ায়। শনিবার দুপুরে মারা যান অকৃতদার এই মানুষটি। সৎকার কীভাবে হবে একদমই ভাবতে হয়নি। গ্রামের হিন্দু-মুসলমানরা পেশায় সকলেই কৃষক। নিজেরাই চাঁদা তুলে শনিবার রাতে পলাশি রামনগর ঘাটে বৃদ্ধর দেহ নিয়ে যায়।

যে বাড়িতে বিষ্ণুবাবু থাকতেন সেই বাড়ির কর্তা রওশান আলি বলেন, “বিনিময় প্রথায় বাংলাদেশ থেকে পলাশিপাড়ায় চলে এসেছিলেন বৃদ্ধ। এই এলাকায় তাঁর জমি ছিল। বয়স হলেও সুস্থ-স্বাভাবিকই ছিলেন। আমরা এলাকায় ওঁকে দাদু বলে ডাকতাম। কোনওদিন মানুষের মধ্যে ভেদাভেদ করতে দেখিনি। এলাকায় কেউ অসুস্থ হলে তার পাশে দাঁড়াতেন। আমাকে চার বিঘা জমিও দান করেছিলেন। তবে গত কয়েকদিন ধরে বার্দ্ধক্যজনিত কারণে ভুগছিলেন। শনিবার দুপুরে মারা যান। তারপরই সবাই মিলে হাজার নয়েক টাকা চাঁদা তুলে রামনগর ঘাটে নিয়ে যাই তাঁকে। সেখানেই তাঁকে সৎকার করা হয়।” ঘটনা প্রসঙ্গে ওসি সুজয় মণ্ডল বলেন, ‘এলাকায় হিন্দু-মুসলিম যেভাবে ঝাঁপিয়ে বৃদ্ধের সৎকার করল তা সত্যিই সম্প্রীতির নজির গড়ল।”

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ