সাংবাদিক বৈঠকে শুভেন্দু।
নন্দন দত্ত, সিউড়ি: দেউচা-পাঁচামিতে জমি ও চাকরি দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সরব হলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। শনিবার সিউড়িতে বিজেপির জেলা দফতরে উপস্থিত হয়ে তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সামিরুল ইসলাম ও জেলাশাসক বিধান রায়ের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ করলেন তিনি। পালটা বিরোধী দলনেতাকে তোপ দেগে সামিরুল জানালেন, ‘সাংগঠিনভাবে দেউলিয়া হয়ে গিয়ে পাগলের প্রলাপ বকছেন শুভেন্দু’। সবমিলিয়ে দেউচা-পাঁচামির কয়লা খনি নিয়ে শনিবার সারাদিন সরগরম রইল বীরভূম।
এদিন বিজেপির দলীয় অফিসে বসে দেউচা-পাঁচামিতে জমি ও চাকরি কেলেঙ্কারি নিয়ে তিন দফা অভিযোগ করেন শুভেন্দু। তিনি বলেন, “সামিরুল ইসলাম তাঁর মাড়গ্রাম এলাকার ২৬ জনকে পিডিসিএলে চাকরি দিয়েছেন। যাদের দেউচা পাঁচামি এলাকায় জমি নেই। দ্বিতীয়ত, বিধান রায় প্রস্তাবিত কয়লা খনি এলাকায় জমি কেনা-বেচা বন্ধ করার নোটিসের পরেও ৫৫ জনকে কেনা-বেচার সুযোগ দিয়েছেন। যারা সুযোগ বুঝে পিডিসিএলকে জমি দিয়ে চাকরি করছে। এবং তৃতীয়ত, এলাকার ভূমি দফতর থেকে পাট্টার রেকর্ড হারিয়ে এলাকার বহিরাগতদের পাট্টা দিয়ে তাদের চাকরি দিয়েছেন। এছাড়াও খনন এলাকায় গাছ প্রতিস্থাপনের নামে প্রকৃতি ধংস করা হয়েছে’। শুভেন্দু বলেন, এই ঘটনায় এলাকার বাসিন্দা সুনীল মুর্মু মামলা দায়ের করবেন। বিজেপি তাঁকে সবরকম আইনি সাহায্য ও পরামর্শ দেবে। শুধু তাই নয়, রামনবমীর পর সিউড়িতে জেলাশাসকের দফতরে অভিযান চলবে বিজেপি তপশিলী জাতি উপজাতি সংগঠনের পক্ষ থেকে।
তবে শুভেন্দুর এই অভিযোগ পুরোপুরি খারিজ করে সামিরুল ইসলাম স্পষ্ট জানিয়ে দেন, “আমার কোনও নিকট আত্মীয় দেউচা-পাঁচামিতে চাকরি পায়নি। নিজের দেউলিয়াপনা ঢাকতে এই মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে।” এদিকে শনিবার সন্ধ্যায় জেলাশাসকের দফতরে দেউচা পাঁচামিতে পড়ে থাকা ১৩ লট পর্যন্ত চাকরি প্রার্থীদের মধ্যে পাঁচজনকে চতুর্থ শ্রেণি পদে নিয়োগপত্র তুলে দিয়েছেন জেলাশাসক। তিনি জানালেন, ‘১৫ নম্বর লটে ৯৯ জনের চাকরির অনুমোদন চলে এসেছে। যার মধ্যে ৫২ জন চতুর্থ শ্রেণি পদে বাকিরা পুলিশের কনেস্টেবল পদে যোগ দেবেন’। শুভেন্দুর অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিধান রায় জানান, ‘জমি কেনাবেচা বন্ধ থাকলেও ওয়ারিশ, মিউটেশনের কাজ চলছে। সেটা বন্ধ হয়নি’। তবে পাট্টা প্রসঙ্গে তিনি জানান, ‘ভূমিহীনদের পাট্টার জন্য দাবি এখনও আসছে। রাজ্যের অনুমতি নিয়ে বিশেষ কয়েকজনকে পাট্টা দেওয়া হয়েছিল। তবে তাদের চাকরিতে নিয়োগ বন্ধ আছে’।
এর পাশাপাশি সামিরুলের আত্মীয়দের চাকরি প্রসঙ্গে বলেন, ‘দেউচা-পাঁচামি শুরুর সময় সামাজিক সমীক্ষা, জমির খোঁজ, অফিসের কাজে চুক্তিভিত্তিক কিছু কর্মী নিয়োগ করা হয়েছে। সে প্রসঙ্গে কেউ বলছেন হয়ত। জমিদাতাদের বাইরে এই প্রকল্পে কাউকে চাকরি দেওয়া হয়নি’। এছাড়া গাছ প্রতিস্থাপনের দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত জেলাশাসক বাবুলাল মাহাতো নিজের মোবাইলের ছবি দেখিয়ে প্রমাণ করে দেন গাছ প্রতিস্থাপনের তিনমাস পরে যেখানে সাফল্য আসে, সেখানে একমাসের মধ্যে ১৮৫টি গাছের মধ্যে বেশ কিছু গাছে ফুল এসে গিয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.