নিজস্ব সংবাদদাতা, বনগাঁ: মিড-ডে মিলের রান্নার দায়িত্ব আগের গোষ্ঠীর হাত থেকে কেড়ে নিয়ে আরেক গোষ্ঠীর হাতে দেওয়া নিয়ে তুমুল ঝামেলা। দুই স্বনির্ভর গোষ্ঠীর বিবাদের জেরে শনিবার বন্ধ রইল রান্না। বনগাঁ পুরসভা পরিচালিত হাজারিলাল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের খুদে পড়ুয়ারা না খেয়েই ফিরে গেল। এনিয়ে ক্ষোভ অভিভাবক মহলে।
কোনও আলোচনা ছাড়া মিড-ডে মিলের রান্নার দায়িত্বে নতুন গোষ্ঠীর উপর ন্যস্ত করা নিয়ে সমস্যার জেরে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ছোট পড়ুয়ারা। বনগাঁ পুরসভার ১৮ নং ওয়ার্ডের পূর্বপাড়া হাজারিলাল প্রাথমিক বিদ্যালয়টি সরাসরি পুরসভা দ্বারা পরিচালিত। দীর্ঘ চার বছর ধরে এখানে মিড-ডে মিলের রান্না করতেন গিরিধারী গোষ্ঠীর সদস্যরা। কিন্তু শুক্রবার আচমকাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক তপন ঘোষ তাঁদের জানান, শনিবার থেকে আর গিরিধারীর সদস্যরা রান্না করবেন না। লক্ষ্যভেদ নামে আরেকটি গোষ্ঠীর হাতে সেই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। লিখিত নির্দেশ ছাড়া শুধু মুখে বলায় প্রধান শিক্ষকের এই নির্দেশ মানতে রাজি নন গিরিধারী গোষ্ঠীর সদস্যরা। শনিবার তাঁরা স্কুলে গিয়ে রান্না করতে পারবেন না শুনে রান্নাঘরের সামনেই বসে পড়েন। এমনকী রান্নাঘর খুলতেই দেননি তাঁরা। এদিকে, নতুন গোষ্ঠীর সদস্যরাও কাজে যোগ দিতে যান। কিন্তু রান্নাঘর বন্ধ থাকায় তাঁরাও কাজ করতে পারেননি।
দুই গোষ্ঠীর এই দ্বন্দ্বের জেরে দিনভর মিড-ডে মিল রান্নাই হল না হাজারিলাল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। ফলে পড়াশোনার পর খালি পেটেই ফিরতে হল পড়ুয়াদের। কিন্তু কেন হঠাৎ এই দায়িত্ব বদলের সিদ্ধান্ত? এবিষয়ে প্রধান শিক্ষককে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি জানান, দপ্তর থেকে তাঁর কাছে নির্দেশ এসেছে। নির্দেশ অনুযায়ী তিনি কাজ করেছেন বলে এও জানান যে, স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের কখনও কোনও লিখিত নির্দেশ দেওয়া হয় না। তবে লিখিত নোটিসের বদলে শুধু মৌখিক নির্দেশে কীভাবে এমন একটা বদল হয়ে যায়, সেই প্রশ্ন তুলেছেন বনগাঁ পুরসভার এই ১৮ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মনোতোষ নাথ। তাঁর পালটা দাবি, এভাবে কাজ করা অন্যায়।
বনগাঁ পৌরসভার পৌরপিতা শংকর আঢ্য বলেন, “ওই গোষ্ঠীর নামে বিস্তর অভিযোগ এসেছে আমাদের কাছে। ওরা বাচ্চাদের শুকনো খাবার খাওয়াত, স্কুলের শিক্ষকদের অভিযোগ পেয়ে আমরা এই ব্যবস্থা নিয়েছি। রান্না বন্ধ থাকলে প্রয়োজনে অন্য স্কুল থেকে মিড-ডে মিল এনে খাওয়ানো হবে বাচ্চাদের।” দুই গোষ্ঠীর দ্বন্দ্বের জেরে স্কুলে মিড-ডে মিল রান্নার ভবিষ্যত অথৈ জলে। এই জটিলতা কবে কাটে, সেটাই দেখার।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.