Advertisement
Advertisement
Kandi

সর্বভারতীয় আইটিআই ট্রেড টেস্টে প্রথম জন্মান্ধ কান্দির বাবলু, নিলেন মোদির হাত থেকে শংসাপত্র

বাবা নীলাদ্রি হালদার দিনমজুরের কাজ করেন, মা গৃহবধূ।

blind Bablu, resident of Kandi first to pass ITI trade test

দিল্লি থেকে ফেরার পর বাবা-মায়ের সঙ্গে বাবলু। নিজস্ব চিত্র

Published by: Suhrid Das
  • Posted:October 12, 2025 2:49 pm
  • Updated:October 12, 2025 8:20 pm   

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জন্ম থেকেই দৃষ্টিহীন। সেজন্য ছোট থেকে স্থানীয়দের কাছে মাঝেমধ্যে হাসির পাত্রও হতে হয়েছিল তাঁকে। কিন্তু আজ সকলেই তার নামে ধন্য ধন্য করছে স্থানীয়রা। দৃষ্টি না থাকলেও জীবনে অনেক দূর এগিয়ে যাক বাবলু। এমনই চাইছেন সকলে। প্রতিবেশীদের নয়নের মণিও হয়েছেন তিনি। হবে নাই বা কেন? প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নিজ হাতে শংসাপত্র দিয়ে সম্মানিত করেছেন তাঁকে। সর্বভারতীয় আইটিআই ট্রেড টেস্টে প্রতিবন্ধীদের মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করেছেন বাংলার কৃতী ছাত্র বাবলু হালদার।

Advertisement

মুর্শিদাবাদের কান্দি মহকুমার উগ্রাভাটপাড়া গ্রামের বাসিন্দা পড়ুয়া বাবলুর। পরিবারের আর্থিক অনটন দীর্ঘদিনের। বাবা নীলাদ্রি হালদার দিনমজুরের কাজ করেন। মা গৃহবধূ। বাবলুর তিন দিদির বিয়ে হয়ে গিয়েছে আগেই। তিন কন্যা সন্তানের পরে বাবলু ওই দম্পতির কোল আলো করে এসেছিল। যদিও ডাক্তাররা ওই দম্পতিকে জানিয়ে দিয়েছিলেন ওই সন্তান জন্মান্ধ। বহু সময়েই অনেকের থেকে গঞ্জনা শুনতে হয়েছিল। কিন্তু বাবা-মা ছেলেকে সঠিকভাবে বড় করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। নির্দিষ্ট সময়ে স্কুলেও ভর্তি হয় বাবলু। ছোট থেকেই অত্যন্ত মেধাবী বাবলু পরীক্ষায় ভালো ফল করতে থাকে। মুর্শিদাবাদের কান্দি মহকুমা শিক্ষায় সব সময় রাজ্যে বিশেষ স্থান অর্জন করে।

নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন ব্লাইন্ড বয়েস অ্যাকাডেমিতে প্রথমে পড়াশোনা। সেখান থেকেই ব্রেইল পদ্ধতির সাহায্যে মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা পাশ করে কলেজে ভর্তি হওয়া। বিএ পাশ করে রামকৃষ্ণ মিশনেই ফের ভর্তি হন বাবলু। তাঁর ট্রেড ছিল মেটাল কাটিং অ্যাটেনডেন্ট। গত সেপ্টেম্বর মাসের ৪ তারিখ পরীক্ষা হয়। সেপ্টেম্বরের শেষে রেজাল্ট বের হয়। দেশের ৪৬ জন টপারের মধ্যে বাবলু রয়েছেন। অক্টোবরের ৪ তারিখ দিল্লি বিজ্ঞান ভবনে সংশাপত্র বিতরণ অনুষ্ঠান হয়। সেখানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাঁর হাতে প্রশংসাপত্র তুলে দেন।

বাবলু হালদারের কথায়, “মনের জোরে অনেক কিছুই করা যায়। একটা সময় ছিল যখন গ্রামের মানুষ আমাকে দেখে হাসত। ঠিক করেছিলাম দেখাতে হবে মানুষ কিনা করতে পারে। আর সেভাবেই এগিয়ে যাই।” তিনি আরও বলেন, “এই সাফল্যের জন্য নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনের শিক্ষক-শিক্ষিকারা সবার আগে। তাঁদের সহযোগিতা না থাকলে এই ফল করতে পারতাম না।” বাবলুর বাবা নীলাদ্রি সরকার বলেন, “দিনমজুরের কাজ করে কোনওরকমে সংসার চলে। ছেলে নিজের পায়ে দাঁড়াতে চায়। সাফল্যে আমি খুবই খুশি।” বাবলুর মা কাজল হালদার বলেন, “প্রথম থেকেই বিশ্বাস ছিল নিজের পায়ে দাঁড়াবে। কিছু একটা করে দেখাবে। আর সেটাই ও করেছে।”

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ