ছবি: প্রতীকী
টিটুন মল্লিক, বাঁকুড়া: ডিজিটাল যুগেও এমন ঘটনা ঘটে! ভাবলে আশ্চর্য হতে হয়৷ স্বপ্নাদেশ পেয়ে কবর খুঁড়ে সন্তানের দেহাবশেষ তুলে আনলেন এক দম্পতি৷ মৃত সন্তান নাকি বেঁচে উঠবে! দিনভর দুধের শিশুর দেহাবশেষ নিয়ে বাড়িতে চলল তন্ত্রসাধনা৷ শেষপর্যন্ত অবশ্য অলৌকিক কিছু ঘটেনি৷ মৃতের বাবা ও তিনজন তা্ন্ত্রিককে পুলিশের হাত তুলে দেন গ্রামবাসীরাই৷ ঘটনাটি ঘটেছে বাঁকুড়ার সারেঙ্গায়৷
[ সৎ বাবার অত্যাচারে স্কুলে আত্মহত্যার চেষ্টা শিশুকন্যার, গ্রেপ্তার দম্পতি]
বাঁকুড়া জেলার সারেঙ্গা ব্লকের প্রত্যন্ত গ্রাম ছোট সারেঙ্গা৷ আদিবাসী অধ্যুষিত গ্রামটিতে শিক্ষার প্রসার সেভাবে ঘটেনি৷ প্রায় সকলেই পেশায় দিন-মজুর৷ ছোট সারেঙ্গা গ্রামে থাকেন মঙ্গল কিস্কু ও তাঁর স্ত্রী ঝর্ণা৷ গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, ওই দম্পতির একটি কন্যা সন্তান ছিল৷ কিন্তু, জন্ম থেকে হৃদযন্ত্রের গুরুতর অসুখে ভুগত সে৷ চিকিৎসা করানোর সামর্থ্য ছিল না হতদরিদ্র পরিবারটির৷ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে বছর দু’য়েক আগে মারা যায় শিশুটি৷ তখন তার বয়স ছিল মোটে দু’বছর৷ সন্তান শোকে দিশেহারা হয়ে পড়েছিলেন কিস্কু দম্পতি৷ তবে ধীরে ধীরে শোক কাটিয়েও উঠছিলেন মঙ্গল ও তাঁর স্ত্রী ঝর্ণা৷
গ্রামবাসীদের দাবি, সোমবার রাতে ঝর্ণা কিস্কু বলেন, তিনি নাকি স্বপাদেশ পেয়েছেন। মেয়ের মৃতদেহ তান্ত্রিকের কাছে নিয়ে গেলে, সে নাকি বেঁচে উঠবে! বাড়ির লোকেরা তো বটেই, আদিবাসী ওই গৃহবধূর কথা মেনে নেন গ্রামবাসীরাও৷ রাতে কবর খুঁড়ে শিশুটির দেহাবশেষ বাড়িতে নিয়ে আসা হয়৷ পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে আসেন তিন জন তান্ত্রিক৷ মঙ্গলবার দিনভর কিস্কু দম্পতির বাড়িতে চলে তন্ত্রসাধনা৷ কিন্তু, বছর দুয়েক আগে যে শিশু মারা গিয়েছে, সে আর বেঁচে ওঠেনি! শেষপর্যন্ত মঙ্গল কিস্কু ও তিন তান্ত্রিককে ধরে বেধড়ক মারধর করেন গ্রামবাসীরা৷ তাঁদের পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়৷
[ দারিদ্র্যই আর্শিবাদ! মাতৃদুগ্ধের স্বাদ পাচ্ছে উলুবেড়িয়ার কয়েক হাজার শিশু]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.