সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: ওঁরাও ‘করোনা যোদ্ধা’! নাকা পয়েন্টে পুলিশের সবর্ক্ষণের সঙ্গী। সকাল থেকে রাত, পুরুলিয়ার ঝাড়খন্ড সীমানার ১৫টি পয়েন্টে ডিউটি করে যাচ্ছেন এই আয়ুশ চিকিৎসকরা। তবে এরা কেউই সরকারের আয়ুশ বিভাগের স্থায়ী চিকিৎসক নন। সকলেই গ্রাম পঞ্চায়েতে কাজ করা আয়ুশ ডাক্তার। কিন্তু জঙ্গলমহল পুরুলিয়াকে করোনা মুক্ত করতে প্রতিমুহূর্তে লড়ে যাচ্ছেন তাঁরাও।
কয়েকদিন আগেই করোনা মোকাবিলায় আয়ুশের দরজা খুলে দেয় কেন্দ্র সরকার। প্রতিবেশী শ্রীলঙ্কাও প্রাচীন ভারতের এই আয়ুর্বেদ শাস্ত্রকে কাজে লাগিয়ে করোনা রোগীদের সুস্থ করছে। তাই পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন গ্রাম পঞ্চায়েতে কাজ করা আয়ুশ চিকিৎসকদের মোতায়েন করেছে নাকা পয়েন্টে। প্রায় আশি জন এই আয়ুশ ডাক্তার পুলিশের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে রুটিন মাফিক ডিউটি করছেন।
কিন্তু কী কাজ এই চিকিৎসকদের?
আন্তঃরাজ্য সীমানা সিল হয়েছে ঠিকই। কিন্তু পরিযায়ী শ্রমিকদের একটা বড় অংশ পায়ে হেঁটে বাড়ি ফিরছেন। সীমানায় এই শ্রমিকরা পুলিশের নজরে পড়লেই থার্মাল গান নিয়ে চলছে তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার কাজ। এক এক করে খাতায় নাম, ঠিকানা লিখে তার রিপোর্ট তৈরি করা। করোনার কোনও উপসর্গ রয়েছে কিনা তা হাইলাইট করে রাখা। এই কাজ শেষে তা ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে জমা করার পরেই ‘ডিউটি আওয়ার’ শেষ হয় এই ডাক্তারদের। এখনও পর্যন্ত এই চিকিৎসকদের হাত ধরে জেলার ১৫টি নাকা পয়েন্টে ৩৫ হাজারের বেশি মানুষের স্বাস্থ্য পরীক্ষা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, পরীক্ষা শেষে এই পরিযায়ী শ্রমিকরা জেলায় ঢুকবেন নাকি ঝাড়খন্ডে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে যাবেন সেই সিদ্ধান্ত অবশ্য দুই রাজ্যের। কিন্তু এই ‘করোনা যোদ্ধা’-রা লড়ে যাচ্ছেন একেবারে আড়ালে থেকেই। প্রচারের আলোর বাইরে থেকেই। জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অনিল দত্ত বলেন, “প্রত্যেকটি নাকা পয়েন্টেই এই আয়ুশ চিকিৎসক আছেন। তাঁরা পুলিশের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন।” জেলায় যে সকল গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র নেই। সেখানেই এই আয়ুশ চিকিৎসরা জাতীয় গ্রামীণ স্বাস্থ্য মিশনের আওতায় মাসিক ১৬,০০০ টাকা ভাতায় গ্রামীন স্বাস্থ্য পরিষেবা দেন। এখন তাঁরাই এক একজন করোনা ফাইটার।
ছবি: অমিত সিংদেও
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.