Advertisement
Advertisement

অতীতে একসঙ্গে অনুষ্ঠান মুনমুন-বাবুলের, রাজনীতির মঞ্চে এখন প্রতিপক্ষ

স্মৃতিতে উজ্জ্বল দু'জনেই, শেষপর্যন্ত ভোট পাবেন কে? দ্বিধাবিভক্ত আসানসোলবাসী৷

Asansol remeber Babul-Mulmun performance
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:March 16, 2019 9:40 am
  • Updated:March 16, 2019 9:40 am  

চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায়,আসানসোল : সেই প্রথম আর শেষবার এক মঞ্চে মুনমুন সেন ও বাবুল সুপ্রিয়কে দেখেছিলেন আসানসোলবাসী। এই কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের হয়ে আসন্ন লোকসভায় লড়ছেন তারকা প্রার্থী মুনমুন সেন৷ বিজেপির প্রার্থী হিসাবে বাবুল সুপ্রিয় একপ্রকার নিশ্চিত। এই পরিস্থিতিতে ২৭ বছর আগের স্মৃতিতে ফিরে গিয়েছেন কুলটির মিঠানির বাসিন্দারা। মোড়ের মাথা, বটতলা, হাটবাজার, চা-দোকান, সর্বত্র  চর্চার বিষয় একটাই। কেমন ছিলেন সেদিনের মুনমুন সেন? কেমনই বা ছিলেন সংগীত জগতে নবাগত বাবুল সুপ্রিয়? স্মৃতিচারণে মগ্ন সবাই৷

Advertisement

চা বাগানের পিছল রাস্তায় হড়কাল গজরাজ, প্রাণে বাঁচলেন শ্রমিক

সালটা ১৯৯২৷ মিঠানি চৌরঙ্গি ক্লাব আয়োজন করেছিল ‘বোম্বে-বাংলা মিউজিক্যাল নাইট’। মহম্মদ আজিজ ছিলেন সেদিনের মূল গায়ক। আর অন্যান্য গায়কদের মধ্যে ছিলেন কিশোর ও শানু কণ্ঠী কুমার সুপ্রিয়, যিনি পরবর্তী সময়ে বাবুল সুপ্রিয় হিসেবে বহুল জনপ্রিয় হয়েছেন। মঞ্চে হাজির ছিলেন টলি-বলি খ্যাত নায়িকা মুনমুন সেন। সেদিনের সেই অনুষ্ঠান কেমন হয়েছিল? কী পোশাক ছিল সুচিত্রা কন্যার? কুমার সুপ্রিয়ই বা সেদিন কোন গানে আসর জমিয়েছিলেন? চর্চা শুরু হতেই ক্লাব কর্তারা সেই দুর্লভ ছবি খোঁজাখুজি শুরু করেছেন। কারণ, সেটাই ছিল আসানসোলে একমাত্র অনুষ্ঠান, যেখানে ‘সেন ও সুপ্রিয়’ একসঙ্গে ছিলেন। এবার লোকসভা ভোটে আসানসোল কেন্দ্রে ‘সেন ও সুপ্রিয়’ যুযুধান দুই পক্ষ।
চৌরঙ্গি ক্লাবের সম্পাদক চিন্তাহরণ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “ ‘বোম্বে-বাংলা মিউজিক্যাল নাইট’ অনুষ্ঠানে মহম্মদ আজিজ, কুমার সুপ্রিয়, মুনমুন সেন, বিপ্লব চট্টোপাধ্যায়রা এসেছিলেন গ্রামের মাটিতে। খুব জনপ্রিয় হয়েছিল অনুষ্ঠান।” সেইসময় ছবি তোলার এত রমরমা ছিল না৷ তাই চিন্তাহরণবাবু কিংবা ক্লাব কর্তৃপক্ষের কাছে অনুষ্ঠানের ছবি খুব বেশি নেই। তবে মুনমুন সেনের ছবিটি আজও ক্লাবে রয়েছে। আজকের  বাবুল সুপ্রিয় তখন সদ্যই পা রেখেছেন সঙ্গীত জগতে৷ সেই সময় ‘কুমার সুপ্রিয়’ নাম নিয়ে অনুষ্ঠান করতেন। তখন তিনি বলিউডে ডাক না পেলেও, কলকাতায় বেশ নামডাক ছিল বাবুলের। আশিকী, জান-তেরে নাম, পেয়ার পেয়ার, দিল কা ক্যায়া কসুর – একের পর এক সিনেমায় প্লেব্যাক গেয়েছিলেন।

বড়মার শ্রাদ্ধানুষ্ঠানেও অব্যাহত পারিবারিক তরজা, ঠাকুরবাড়িতে আলাদা আয়োজন

চৌরঙ্গি  ক্লাবের আরেক সদস্য সুশান্ত মুখোপাধ্যায়ের স্মৃতিতে বেশ টাটকা সেদিনের অনুষ্ঠান৷ তিনি জানান, “আমার মনে আছে, বাবুল আকাশি রঙের ব্লেজার পরে এসেছিলেন। একমাথা তাঁর কোঁকড়ানো চুল ছিল। অখ্যাত হয়েও মঞ্চ সেদিন মাতিয়ে দিয়েছিলেন।” সেদিনের দর্শকদের মধ্যে গোলাপী চট্টরাজ বলেন, “মুনমুন সেন পিঙ্ক রঙের সাউথ সিল্ক পড়ে মঞ্চে উঠেছিলেন। কোনও মেকআপ ছাড়াই তাঁকে দেখতে পেয়েছিলাম। দুধে—আলতা গায়ে রং মঞ্চের আলোয় যেন ঠিকরে পড়ছিল। অনেক গল্প করেছিলেন মঞ্চে দাঁড়িয়ে।” তখন মুনমুন সেনের জনপ্রিয়তাই ছিল আলাদা। ক্লাবের সদস্যরা স্মৃতি রোমন্থন করতে গিয়ে জানান, অটোগ্রাফ দেওয়ার সময় মুনমুন সেন একটি করে পাখি এঁকে দিয়েছিলেন।

বাড়ির বড়দের আশীর্বাদ নিয়ে প্রচার শুরু বীরবাহার, জনসংযোগে মৃগাঙ্ক

এই ক্লাবের বর্তমান ক্লাব সভাপতি রাজ্যের মন্ত্রী মলয় ঘটক। ক্লাবের সদস্যরা সক্রিয় তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী। তাঁদের আশা, মিঠানিতে প্রচারে এলে মুনমুন সেনকে সেই স্মৃতি ফিরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবেন তাঁরা। সেদিনের ছবি, অটোগ্রাফ ও পোস্টারগুলি নিয়ে কোলাজ বানিয়ে উপহার দেবেন। একইভাবে ক্লাবের সদস্যরা বাবুল সুপ্রিয় এলেও তাঁকে উষ্ণ অভিবাদন জানাবেন। লোকসভার লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে যেন ফিরে এসেছে ১৯৯২ সালের সুখস্মৃতি। বর্তমান প্রেক্ষাপটে যা খুবই প্রাসঙ্গিক মনে করছেন কুলটিবাসী৷দুই প্রিয় শিল্পীর মধ্যে রাজনীতিতে কাকে বেছে নেবেন তাঁরা? থাকছে দোলাচলও৷

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement