Advertisement
Advertisement
অধ্যাপক

নিজের বাড়িতেই অধ্যাপককে শ্বাসরোধ করে খুন, কারণ নিয়ে ধন্দে পুলিশ

পুরুলিয়ার এই ঘটনায় স্ত্রীর ভূমিকা ভাবাচ্ছে পুলিশকে।

A proffessor allegedly killed in his home at Purulia's Ranbindra pally
Published by: Sayani Sen
  • Posted:January 18, 2020 11:31 am
  • Updated:January 18, 2020 11:36 am   

সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: নিজের বাড়িতে শ্বাসরোধ করে খুন করা হল অধ্যাপককে। এক যুবক বাড়িতে ঢুকে এই কাণ্ড ঘটায় বলেই দাবি তাঁর মায়ের। ছেলের খুনের সময় পুত্রবধূ একেবারেই শান্ত ছিলেন বলেই দাবি অধ্যাপকের মায়ের। পুরুলিয়ার রবীন্দ্রপল্লির এই ঘটনায় অধ্যাপকের স্ত্রীর আচরণই ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের। তিনি কী তবে খুনের ঘটনার সঙ্গে কোনওভাবে সেই প্রশ্নও ইতিমধ্যেই মাথাচাড়া দিয়েছে।

Advertisement

অরূপ চট্টরাজ নামে বছর বাহান্নর ওই ব্যক্তি পুরুলিয়া শহরের নিস্তারিণী মহিলা মহাবিদ্যালয়ের অর্থনীতির আংশিক সময়ের অধ্যাপক ছিলেন। মা, স্ত্রী এবং মেয়েকে নিয়ে রবীন্দ্রপল্লি এলাকায় বাস করতেন তিনি। কলেজ সেরে প্রতিদিন সন্ধেয় ক্যারাম খেলে রাত সাড়ে দশটা নাগাদ বাড়ি ফিরতেন। শুক্রবারও তার ব্যতিক্রমী হয়নি। এদিনও ঠিক সময়েই বাড়ি ফিরে খাওয়াদাওয়া সেরে উপরের ঘরে ঘুমোতে যান তিনি। পরিবারের দাবি, আচমকাই ঘরের আলো বন্ধ হয়ে যায়। চিৎকার করতে শুরু করেন অরূপ। অধ্যাপকের মা নীলাদেবী দৌড়ে উপরের ঘরে উঠে যান। তিনি দেখেন অন্ধকার ঘরে একজন লম্বা চেহারার যুবক তাঁর ছেলের গলায় মাফলার জড়িয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করছে। ছুটতে ছুটতে নীচে নেমে আসেন তিনি। পুত্রবধূ পাপড়িকে ছেলের বিপদের কথা জানান। তবে শাশুড়ির দাবি, সেই সময় পুত্রবধূ তাঁকে শান্ত গলায় ধীরে সুস্থে নীচে নেমে আসার পরামর্শ দেন। নিজের স্বামী আর্ত চিৎকার শোনার পরেও কীভাবে একজন মহিলা এত শান্ত থাকতে পারলেন, সে বিষয়টি ভাবাচ্ছে পুলিশকে।

Papri-Chattoraj

[আরও পড়ুন: সুন্দরীদের সঙ্গে উষ্ণ বন্ধুত্বের হাতছানি দিয়ে আর্থিক প্রতারণা, ধৃত ১৬ জন মহিলা]

এদিকে, চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরাও জড়ো হয়ে যান। তবে ততক্ষণে অধ্যাপককে খুনের পর ছাদের দরজা বাইরে থেকে তালাবন্ধ করে পালিয়ে যায় অভিযুক্ত। তাই অধ্যাপকের মা ছাড়া তাকে দেখতে পায়নি কেউই। এরপরই খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। গভীর রাতে অধ্যাপকের নিথর দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তাঁর দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। যে ঘরটিতে অধ্যাপককে খুন করা হয়, সেই ঘরটিকে সিল করে দেওয়া হয়েছে। পুলিশের অনুমান, অধ্যাপক আসার আগেই ঘরের ভিতর ওঁত পেতে বসেছিল আততায়ী। তাকে ঘরে ঢুকতে পরিবারের কেউ সাহায্য করে থাকার সম্ভাবনা প্রবল বলেও দাবি তদন্তকারীদের। তবে কে সেই ব্যক্তি, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। জেলা পুলিশ সুপার এস সেলভামুরুগন বলেন, “তদন্ত চলছে।”

এলাকায় ভাল মানুষ হিসাবেই পরিচিতি রয়েছে অধ্যাপকের। বইপত্র ছাড়া গান অত্যন্ত ভালবাসতেন তিনি। নিজের ছাত্রীকেই বেশ কয়েক বছর আগে বিয়ে করেছিলেন তিনি। অরূপ এবং পাপড়ির একটি কন্যাসন্তানও রয়েছে। একটি বেসরকারি ইংরাজি মাধ্যম স্কুলের শিক্ষিকা পাপড়ি। ওই স্কুলেরই চতুর্থ শ্রেণির পড়ুয়া তাঁর মেয়ে। এই খুনের ঘটনায় কে বা কারা জড়িত, সে বিষয়টি কিছুতেই বুঝতে পারছেন না অধ্যাপকের স্ত্রী। তিনি বলেন, “রাতে খাওয়াদাওয়ার পর আমাদের কথা হয়। মেয়ের তবলা কেন সারিয়ে দিচ্ছেন না এ বিষয়েই মূলত কথা বলি আমরা। কিন্তু কী হয়ে গেল বুঝতে পারছিনা।” এদিকে, মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর থেকেই বাড়ির সামনে ছাত্রছাত্রী এবং অধ্যাপকদের ভিড়। গোটা এলাকাজুড়েই শোকের ছায়া।

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ