বিপ্লবচন্দ্র দত্ত, কৃষ্ণনগর: সুপারি দিয়ে দুর্গা প্রতিমা তৈরি করে তাঁক লাগিয়ে দিলেন নদিয়ার (Nadia) কৃষ্ণগঞ্জের এক বধূ। যদিও তিনি প্রতিমা শিল্পী নন, নিজের শিল্পীসত্ত্বার তাগিদেই পরিবেশবান্ধব সামগ্রী দিয়ে দেবীমূর্তি তৈরি করে ফেলেছেন তিনি। প্রতিমাটি বিক্রি করতে পারলে তা দিয়ে দুস্থ মানুষদের পাশে দাঁড়াতে চান ওই বধূ।
নদিয়ার বাসিন্দা ওই বধূর নাম পাপিয়া কর। তাঁর স্বামী পেশায় সবজি বিক্রেতা। ছেলে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়া। দিনভর বাড়ির কাজেই সময় কেটে যায় পাপিয়াদেবীর। কিন্তু তা বলে কি নিজের শিল্পীসত্ত্বাকে মরতে দেওয়া যায়? তাই রাত ১০টার পর নিজের জন্য সময় বের করে নেন ওই বধূ। সারাবছরই ওই সময়টুকু কাজে লাগিয়ে পরিবেশবান্ধব সামগ্রী দিয়ে নানা জিনিস তৈরি করেন তিনি। আর পুজোর (Durga Puja 2020 ) সময় তৈরি করেন দেবীমূর্তি। এবছর আচমকাই তাঁর মাথায় আসে সুপারি দিয়ে প্রতিমা তৈরির কথা। যেমন ভাবা তেমন কাজ। প্রয়োজনীয় সামগ্রী জোগাড় করে শুরু দেন প্রতিমাতৈরি। ২ কেজি সুপারি-আঠায় ১৮ দিনের পরিশ্রমে গড়ে তোলেন দশভূজা। যার উচ্চতা ১ ফুট ৪ ইঞ্চি। দুর্গা মূর্তির উচ্চতা ১০ ইঞ্চি, ৭ ইঞ্চি উঁচু লক্ষ্মী ও সরস্বতী। স্ত্রীর শিল্পীসত্ত্বায় মুগ্ধ পাপিয়াদেবীর স্বামী।
পাপিয়াদেবীর কথায়, “আমি কারও কাছে থেকে শিল্পকর্মের শিক্ষা নিইনি। ছোটবেলায় ছবি আঁকতাম। কিছু একটা করব, সেই ভাবনা আমার মাথার মধ্যে বরাবরই ছিল। পরিবারের লোকেরা আমাকে ভীষণ সমর্থন করেন। সেজন্য আমি মানসিকভাবে ভীষণ খুশি।” তবে এখন আশঙ্কা তাড়া করছে পাপিয়া দেবীকে, আদৌ এই প্রতিমা বিক্রি হবে তো? প্রতিবছরই পাপিয়াদেবীর মূর্তি কেনেন পুজো কমিটি। তবে এবারের সুপারির মূর্তি এখনও কেউ কেনেনি। তাঁর চিন্তা, মূর্তি না বিক্রি হলে সমাজের অসহায় মানুষগুলোর মুখে হাসি ফোটাবেন কী করে। কারণ, বরাবরই তাঁর মূর্তির টাকা দিয়ে সামর্থ্য মতো দুস্থ মানুষদের সাহায্য করেন পাপিয়াদেবী।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.