ফাইল ছবি
সুকুমার সরকার, ঢাকা: পদ্মার ইলিশ কিনতে নাকি এবছর তেমন আগ্রহ নেই। সেই কারণে লোকসামনের আশঙ্কায় ভুগছেন বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা। ভয়ে ভারতে ইলিশ পাঠাতে চাইছেন না। ভারতে রপ্তানি নিয়ে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ইলিশ মোকামে ধোঁয়াশা দেখা দিয়েছে। বুধবার থেকে রপ্তানি শুরু হয়েছে। কিন্তু তার পরদিন, বৃহস্পতিবার থেকেই নাকি রপ্তানিকারকরা ইলিশ কিনছেন না। তাঁদের দাবি, চড়া দামে কিনে কম দামে রপ্তানি করায় লোকসান হচ্ছে। এছাড়া কলকাতার বাজারে পর্যাপ্ত ইলিশ থাকায় সেখানকার ব্যবসায়ীদের ইলিশ কিনতে আগ্রহ নেই। সবমিলিয়ে বরিশালের ব্যবসায়ীরা আর ইলিশ রপ্তানি করে নারাজ।
এদিকে রপ্তানিকারকরা ইলিশ না কেনায় শুক্রবার পাইকারি মোকামে বাঙালির প্রিয় মাছের দাম কমেছে মণ প্রতি ৩ থেকে ৫ হাজার টাকা। যদিও খুচরা বাজারে এর কোনও প্রভাব নেই। আগের মতোই ইলিশের দাম আকাশছোঁয়া, সাধারণ মানুষের সাধ্যের বাইরে। দুর্গোৎসব উপলক্ষে ভারতে ১ হাজার ২০০ টন ইলিশ রপ্তানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। বাণিজ্য মন্ত্রক রপ্তানি দর নির্ধারণ করেছে প্রতি কেজি ১২ দশমিক ৫ মার্কিন ডলার বা এক হাজার ৫২৫ টাকা। ৩৭টি প্রতিষ্ঠানকে রপ্তানির অনুমোদন দেওয়া হয়। ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে ৫ অক্টোবরের মধ্যে রপ্তানি করতে হবে। ব্যবসায়ীদের দেওয়া তথ্য বলছে, চলতি মরশুমের শুরু থেকে সাগর-নদীতে পর্যাপ্ত ইলিশ না পাওয়ায় দাম সাধারণের নাগালের বাইরে। রপ্তানিযোগ্য (৬০০ গ্রামের বেশি) ইলিশের দাম পাইকারি দরে দু’হাজার টাকা। এক কেজি বা এর বেশি ওজন হলে তার দাম ২ হাজার ২০০ থেকে আড়াই হাজার টাকা। রপ্তানির জন্য মাছ প্যাকেজিং ও বেনাপোল পর্যন্ত পরিবহণ খরচ যুক্ত করলে কেজিতে ১০০ থেকে ১৩০ টাকা বেড়ে যায়। ফলে বাণিজ্য মন্ত্রক নির্ধারিত ১ হাজার ৫২৫ টাকা কেজি দরে রপ্তানি করলে বড় লোকসান হবে। এ কারণে রপ্তানির অনুমতি পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো ইলিশ রপ্তানিতে আগ্রহী নয়।
একাংশের অভিযোগ, ব্যবসায়ীরা আগেই চোরাপথে পর্যাপ্ত ইলিশ ভারতে পাঠিয়েছেন। যে কারণে এদেশের চেয়ে এখন ভারতের বাজারে ইলিশ বেশি। যার প্রভাব পড়েছে রপ্তানির ক্ষেত্রে। বরিশাল পোর্ট রোড মোকামের চারটি প্রতিষ্ঠান রপ্তানির অনুমতি পেয়েছে। এর মধ্যে মাহিমা এন্টারপ্রাইজের ব্যবস্থাপক বাবর আলি সংবাদমাধ্যমকে জানান, বরিশাল থেকে যেসব আড়তদার ইলিশ কিনে রপ্তানিকারকদের কাছে পাঠান, দু’দিন ধরে তাঁরা পড়েছেন বিপাকে। রপ্তানি দরের চেয়ে বাজারে দাম অনেক বেশি। অন্যদিকে ভারতের বাজারে নিজস্ব ইলিশ থাকায় সেখানকার বাজারে দাম কম। বলা হচ্ছে, ভারতের আমদানিকারকরা পদ্মার ইলিশ নিতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। যে কারণে অনুমতি পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর বেশির ভাগই রপ্তানি বন্ধ রেখেছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.