ফাইল ছবি
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বদলের বাংলাদেশে চিনা নির্ভরতা যেন দিনদিন বাড়ছে। এবার তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য চিনের কাছে হাত পাতল ইউনুসের সরকার। প্রকল্প বাস্তবায়নে বেজিংয়ের কাছে ৬৭০০ কোটি টাকা চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। সরকারি আধিকারিকরা জানিয়েছেন, চলতি বছরের মধ্যেই আর্থিক চুক্তি হতে পারে ঢাকা-বেজিংয়ের মধ্যে। পরের বছর থেকে কাজ শুরু হওয়ার কথা। আর এই সুযোগে বাংলাদেশকে আরও কাছে টেনে ভারতকে চাপে ফেলার কোনও সুযোগ হাতছাড়া করে চাইছে না জিনপিংয়ের দেশ।
তিস্তা মহাপরিকল্পনা প্রকল্পের পুরো নাম ‘কম্প্রিহেনসিভ ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড রেস্টোরেশন অব তিস্তা রিভার প্রজেক্ট’ বা তিস্তা নদীর সামগ্রিক ব্যবস্থাপনা ও পুনরুদ্ধার প্রকল্প। এ মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে চিন ও ভারত – দু’দেশই বিভিন্ন সময়ে আগ্রহ দেখিয়েছে। ২০২৪ সালের মে মাসের শুরুতে বাংলাদেশ সফরে ভারতের তৎকালীন পররাষ্ট্রসচিব বিনয় কোয়েত্রা জানিয়েছিলেন, তিস্তা প্রকল্পে বিনিয়োগে আগ্রহী ভারত। তৎকালীন আওয়ামি লিগ সরকারও চেয়েছিল, প্রকল্পে যেন ভারতই বিনিয়োগ করে। গত জুলাইতে গণভবনে এক সাংবাদিক সম্মেলনে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, ‘‘চিন তো রেডি, কিন্তু আমি চাইছি যে এটা ইন্ডিয়া করে দিক। এই প্রজেক্টটা করলে এই প্রজেক্টটার জন্য যা দরকার, ইন্ডিয়া দিতেই থাকবে।”
কিন্তু হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশ নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে গঠিত হয় অন্তর্বর্তী সরকার। তারা চাইছে, চিনের ঋণে তিস্তা মহাপ্রকল্প বাস্তবায়িত হোক। জলসম্পদ মন্ত্রণালয় গত ২৬ মে একটি চিঠি পাঠিয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে। চিঠিতে তিস্তা প্রকল্প বাস্তবায়নে চিনের ঋণের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। পরে গত জুলাইয়ের দ্বিতীয় সপ্তাহে চিনা দূতাবাসে চিঠি পাঠায় অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ। বর্তমান সরকারের পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ মাস খানেক আগে জানিয়েছিলেন, তিস্তা প্রকল্প বাস্তবায়নে চিনের ঋণেই আগ্রহী। চিনও প্রকল্পে বিনিয়োগ করতে চায়। দুই পক্ষের সম্মতিতেই বিষয়টি এগোচ্ছে। তিনি জানান, প্রকল্পের নকশা এখনও ঠিক হয়নি।
প্রকল্পের নথি অনুযায়ী, তিস্তা প্রকল্পের প্রথম পর্যায় (ফার্স্ট ফেজ) বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৭৫ কোটি ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৯ হাজার ১৫০ কোটি টাকার সমপরিমাণ (ডলারপ্রতি ১২২ টাকা ধরে)। এর মধ্যে চিনের কাছ থেকে ঋণ চাওয়া হয়েছে ৫৫ কোটি ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৬ হাজার ৭০০ কোটি টাকা)। বাকি টাকা সরকারি কোষাগার থেকে দেওয়া হবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ের কাজ শুরু হবে ২০২৬ সালে। শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২০২৯ সাল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.